শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

২ বছর স্থগিতের পর ২ ফিলিস্তিনি এনজিওর অর্থায়ন আবারও চালু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

ইসরায়েলের আনা ‘জঙ্গিবাদ সমর্থনের’ অভিযোগের মুখে গত বছর ইউরোপীয় কমিশন ২টি ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থার অর্থায়ন স্থগিত করে। সম্প্রতি এ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। একই সঙ্গে, এ দুই সংস্থার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আনা ‘জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার’ অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেছে ইইউ।

ইইউর নির্বাহী শাখা ইউরোপীয় কমিশন কয়েকদিন আগে আল-হাক ও প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (পিসিএইচআর) নামের এই ২ সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ১৩ মাস আগে তাদের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শর্তহীনভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষনিকভাবে প্রযোজ্য। ইউরোপীয় কমিশন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতারণাবিরোধী কার্যালয়ের (ওএলএএফ) বরাত দিয়ে জানায়, এই ২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম বা প্রতারণামূলক কার্যক্রমের কোনো লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়নি, যার ফলে ‘তদন্ত পরিচালনার জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই।’
এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রদের মতে, আল-হাক ইউরোপীয় কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে উদ্যত হলে এই ইমেল পাঠানো হয়। ২০২১ এর মে মাসে ইইউ আল-হাক ও পিসিএইচআরের অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। সে সময়, ইউরোপের কূটনীতিকরা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে একটি গোপন নথি পান। সেখানে দাবি করা হয়, আল-হাক সহ ৬টি প্রথম সারির ফিলিস্তিন ভিত্তিক এনজিও ইইউর কাছ থেকে পাওয়া অর্থ ব্যবহার করে পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) নামের সংগঠনের অর্থায়ন করছে। এ তালিকায় পিসিএইচআরের নাম না থাকলেও আল-হাকের পাশাপাশি এ সংস্থারও অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় ইউরোপীয় কমিশন।
২০২১ এর অক্টোবরে ইসরায়েল পিএফএলপির সঙ্গে যোগসূত্রের অভিযোগে উল্লেখিত ৬ প্রতিষ্ঠানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এ উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো অযৌক্তিক ও অন্যায় হিসেবে অভিহিত করে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দা জানায়।
ইসরায়েল সরকার তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো জোরালো প্রমাণ দেয়নি। আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আইনি গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে অনুসন্ধানের পর অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আল-হাক ইউরোপীয় কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। ৪ জুলাই বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে এ বিষয়ে প্রথম শুনানির দিন ধার্য করে আদালত।
আল-হাক জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও সংস্থাটি আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে। কারণ ইউরোপীয় কমিশনের এ উদ্যোগে সংস্থাটির সুনামহানি হয়েছে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেটাও তারা নিশ্চিত করতে চায়।
আল-হাক ও পিসিএইচআরের মত নাগরিক সমাজভিত্তিক সংগঠনগুলো দাতা দেশগুলো থেকে পাওয়া তহবিলের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন অধিগ্রহণকৃত এলাকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। ফিলিস্তিনভিত্তিক এনজিও এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এরকম সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও কিছু আন্তর্জাতিক লবি গ্রুপের লক্ষ্যবস্থ হয়েছে।
১৯৬৭ সাল থেকে শুরু করে ইসরায়েল ৪০০’র চেয়েও বেশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ‘শত্রুভাবাপন্ন’ ও ‘অবৈধ’ তকমা দিয়ে নিষিদ্ধ করেছে। নিষিদ্ধের তালিকায় আছে ফিলিস্তিনের সকল মূল রাজনৈতিক দল। সূত্র : আল-জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন