শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

হট্টগোলে উত্তাল ভারতের পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হট্টগোলে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের পার্লামেন্ট। প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেছেন বিরোধী সংসদ সদস্যরা। এর আগে নোট বাতিলের বিরোধিতাকারী রাজনীতিকদের খোঁচা দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিরোধীরা প্রতিবাদ করছেন, কারণ, তারা নিজেদের কালো টাকা সাদা করে নিতে পারেননি। আর তাই কালো টাকার শোকেই এই প্রতিবাদ। ভারতের পার্লামেন্টে গত শুক্রবার মোদির এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন বিরোধী সংসদ সদস্যরা। তারা দাবি তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে এই মন্তব্যের জন্য পার্লামেন্টে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। এদিনও বিরোধীদের হট্টগোলে বার বার মুলতবি হয় লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন। নোট বাতিল ইস্যুতে এমনিতেই প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ভারতের পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন। ভারতের সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গত শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নোট বাতিল নিয়ে বিরোধীদের সমলোচনার জবাব দেন। তিনি এদিন বলেন, সাধারণ মানুষ দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কিছু লোক সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তাদের অভিযোগ হলো, সরকার কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আসলে ব্যাপার হলো, সরকার প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই দেয়নি। যদি তারা বাহাত্তর ঘণ্টাও সময় পেতেন, তাহলে সব কালো টাকা সাদা করে নিতেন। আর তাহলে তারাই বলতেন, মোদি বিরাট কাজ করেছেন। মোদি এদিন কালো টাকা উদ্ধারে সরকারের সিদ্ধান্তের সাফাই গেয়ে আরো বলেন, প্রত্যেকেরই নিজ টাকা খরচ করার অধিকার রয়েছে। তবে দুনিয়া বদলে যাচ্ছে। টাকা এখন আর শুধু পকেট থেকেই খরচ করা যায় না; এখন ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করেও টাকা খরচ করা। মোবাইল টেকনোলজি ব্যবহার করেও এই কাজ করা যায়। মোদির যুক্তি, দেশের ১০০ কোটি মানুষের হাতে এখন মোবাইল ফোন রয়েছে। ফলে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশকে ক্যাশলেস ইকোনমির দিকে এগোতে হবে। পরে পাঞ্জাবে এক জনসভায়ও কালো টাকার বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন মোদি। তিনি সেখানে বলেন, কালো টাকা ও দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে মধ্যবিত্তের। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মানুষ যেভাবে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, তাদের ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা জানা নেই আমার। নোট বাতিল ইস্যুতে বিরোধীদের প্রতি মোদির কটাক্ষ পার্লামেন্ট অধিবেশনে থাকা বিরোধীদের এদিন আরো তাতিয়ে দেয়। বিরোধীদের কালো টাকা সংক্রান্ত মোদির মন্তব্যের খবর পার্লামেন্টে পৌঁছতেই উত্তাল হয়ে ওঠে পার্লামেন্ট অধিবেশন। বিরোধী পক্ষ দাবি তুলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা গুলাম নবী আজাদ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধীরা কালো টাকাকে সমর্থন করছেন। বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে যে কথা তিনি বলেছেন, তা অত্যন্ত গুরুতর। তাকে পার্লামেন্টে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। কংগ্রেসের সুরেই সরব হয়েছে অন্যসব বিরোধী দল, এমনকি বিজেপির শরিক শিবসেনাও। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে ক্ষমা চাইতেই হবে। তাকে স্পষ্ট করে এটাও জানাতে হবে, কাদের কাছে কালো টাকা রয়েছে। এদিন তুমুল হৈ-হট্টগোলের কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন। রাজ্যসভায়ও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিরোধীরা। এরপর দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশনও মুলতবি হয়ে যায়। বিরোধীরা বিতর্কের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি দাবি করেন। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদি রাজ্যসভার অধিবেশনে হাজির হলেও সেখানে কোনো বিবৃতি দেননি। জি-নিউজ, এনডিটিভি, এবিপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন