তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যেই আবারও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির টেন্ডার ফ্লপ (ব্যর্থ) হয়েছে পাকিস্তানে। এবার এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হলেও একটিও আবেদন জমা পড়েনি। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির টেন্ডার ফ্লপ হল দেশটিতে। এতে পাকিস্তানের জ্বালানি সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও কয়েক মাস ধরে এই জ্বালানি সংকট অব্যাহত থাকতে পারে দেশটিতে। পাকিস্তানে বিদ্যুৎ-সংকট ক্রমশই বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘জিও নিউজ’ এর আগে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। বলা হয়, গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ‘পাকিস্তান এলএনজি লিমিটেড’ প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য চুক্তি করতে পারছে না। জানা গেছে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ‘পাকিস্তান এলএনজি লিমিটেড’ চতুর্থ বারের মতো এক বিলিয়ন ডলারের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ক্রয়ের দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে একটিও টেন্ডার পড়েনি। ফলে বৃহস্পতিবার এই টেন্ডার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তুলনামূলক দরিদ্র দেশ পাকিস্তান জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীল। এই টেন্ডার ফ্লপ হওয়ার অর্থ হল- জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে দেশটি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এমতাবস্থায় দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে একটি আর্থিক প্যাকেজ সহায়তা নিয়ে আলোচনা করছে। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এশিয়াজুড়ে আগেই বেড়েছে গ্যাসের দাম। এই অবস্থায় রাশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণে গত কয়েক সপ্তাহে গ্যাসের দাম আরও বাড়তে শুরু করেছে। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটে পড়েছে ইউরোপ। ফলে বর্তমানে বৈশ্বিক এলএনজি প্রবাহ এখন সেদিকে যাচ্ছে। কেননা, এই মুহূর্তে তারা অন্য বাজারের চেয়ে বেশি মূল্য পরিশোধ করতে ইচ্ছুক। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও ভারতও উচ্চমূল্যের কারণে গ্যাস ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে। তবে তারা এখনও পাকিস্তানের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতি পড়েনি। বিশ্বের পঞ্চম-বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তান বৃহস্পতিবার বন্ধ হয়ে যাওয়া এই টেন্ডারের মাধ্যমে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মধ্যে স্পট মার্কেট থেকে ১০টি এলএনজি কার্গো কিনতে চেয়েছিল। ব্লুমবার্গের তথ্যানুসারে, পাকিস্তান গত বছর দেশটির প্রায় অর্ধেক এলএনজি কিনেছে স্পট মার্কেট থেকে। বাকিটা এসেছে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায়। এদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন- পাকিস্তান সরকার যদি গ্যাস সরবরাহকারী কোনও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টেন্ডারে সাড়াও পায়, তারপরও মূল্য বৃদ্ধি কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটি গ্যাস কিনতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ব্লুমবার্গ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন