বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাড়ছে কালাজ্বরের হানা পশ্চিমবঙ্গে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০৪ এএম

প্রায় ভুলে যাওয়া কালাজ্বর ফের হানা দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। মূলত কাঁচা বাড়ির বাসিন্দারা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। একসময় কলেরা বা বসন্তের মতো কালাজ্বরের প্রকোপ ছিল পশ্চিমবঙ্গে। তখন বহু মানুষ কার্যত বিনা চিকিৎসায় এই জ্বরে মারা গেছেন। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি সুকুমার রায় খুব অল্প বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে এই কলকাতা শহরে মারা যান। সেই সময় তার চিকিৎসা করানো যায়নি। ২১ শতকে যখন কলেরার প্রাদুর্ভাব নেই বললেই চলে, তখন পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় দেখা দিয়েছে কালাজ্বর। স্বাস্থ্য ভবনের সূত্র অনুযায়ী, ১১টি জেলায় কালাজ্বরে আক্রান্ত ৬৫ জন রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, কালিম্পং, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া প্রভৃতি জেলায় রোগীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এই রোগ চিহ্নিত করা কঠিন নয়। বিশেষ ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে ১৫ মিনিটের মধ্যে রোগ নির্ণয় সম্ভব। ম্যালেরিয়া যেমন মশাবাহিত রোগ, তেমনই কালাজ্বরকে বহন করে মাছি। ১৪ দিনের বেশি জ্বর, কাশি, লিভার বেড়ে যাওয়া, রক্তাল্পতা বা ত্বকের রং পরিবর্তন-সহ নানা উপসর্গ থাকলে বোঝা যায় কেউ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। ভিজে, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বসবাসকারী স্যান্ড ফ্লাই বা বেলেমাছি এই রোগের জীবাণু বহন করে। এই মাছি মানুষকে কামড়ালে তার দেহে কালাজ্বরের জীবাণু চলে আসতে পারে। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে এই রোগে মৃত্যু অসম্ভব নয়। এ বছর কালাজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তায় ফেলার মতো। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের দাবি, মূলত বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা মানুষজনের মাধ্যমে এই রোগ পশ্চিমবঙ্গে ছড়াচ্ছে। ইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, কয়েকটি অঞ্চলে এই রোগ বেশি হয়। বিশেষত গাঙ্গেয় অববাহিকা সংলগ্ন অঞ্চল, যেহেতু এ সব এলাকায় বেলে মাছির বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন-এ কালাজ্বর নিয়ে গবেষণা করেছেন ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী। ডাব্লুএইচও-র প্রাক্তন এই সদস্য বলেন, ‘‘শুধু সরকারের ঘাড়ে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কালাজ্বরের ঢেউ ২৫-৩০ বছর পর পর ফিরে আসবে, তাতে মানুষ আক্রান্ত হবেই। ১৮৩০ সালে অবিভক্ত ভারতের যশোর জেলায় ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন এই জ্বরে। ভারতের মতো বাংলাদেশ, পাকিস্তানেও এই জ্বরের খোঁজ পাওয়া যায়। এবিপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন