যত যাই করুন না কেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে কোনোভাবেই শান্তি আসবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সোজাসাপ্টা এ কথা জানিয়ে দিলেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। জেদ্দায় শনিবার বৈঠককালে বাইডেনকে এ কথা বলেন জর্ডানের বাদশাহ। খবর সউদী গ্যাজেটের। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ বাইডেনকে বলেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করার আগ পর্যন্ত এ অঞ্চলে শান্তিও আসবে না, সমৃদ্ধিও দেখা দেবে না। তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালের ৪ জুনের আগে ফিলিস্তিনের যে ভূখণ্ড ছিল সেই ভূখণ্ডে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম ও আমার প্রিয় ভাই সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ধন্যবাদ জেদ্দা সম্মেলনে আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থিতিতে জেদ্দায় শনিবার বিকালে সউদী আরব, ইরাক, জর্দান, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং ওমানের শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ শীর্ষ সম্মেলনের নাম দেওয়া হয় ‘জেদ্দা নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সম্মেলন’। জো বাইডেন ইহুদিবাদী ইসরাইল সফর শেষে শুক্রবার জেদ্দায় পৌঁছান। তার মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে পশ্চিমা গণমাধ্যম এ কথা ফলাও করে প্রচার করেছিল যে, এই সফরে ইসরাইলকে অন্তর্ভুক্ত করে আরব দেশগুলোকে নিয়ে ইরানবিরোধী একটি সামরিক জোট গঠন করে দেবেন বাইডেন। পরিকল্পিত সামরিক জোটকে ‘আরব ন্যাটো’ বলেও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কয়েকটি আরব দেশের বিরোধিতার মুখে সে ধরনের কোনো জোট গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়নি। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতি স্পষ্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শনিবার তিনি ছয় আরব দেশের সম্মেলনে সাফ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাবে না এবং রাশিয়া, চীন কিংবা ইরানের জন্য এই অঞ্চলে কোনো শূন্যস্থান রাখা হবে না। এছাড়া ইরান যাতে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র না পায় তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শনিবার জেদ্দায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে গালফ কোঅপারেশনের সদস্য সউদী আরব, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপ্রধানরা হাজির ছিলেন। এছাড়া জর্ডান, মিশর ও ইরাকের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছে। সম্মেলনে বাইডেন বলেছেন,‘আমরা দূরে সরে যাব না এবং চীন, রাশিয়া কিংবা ইরানের জন্য শূন্যস্থান রাখবো না। আমরা এই মুহূর্তে সক্রিয় ও নীতিগত আমেরিকান নেতৃত্ব চাইব।’ মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটিগুলোতে এখনও আমেরিকান সেনারা অবস্থান করছে এবং তারা এই অঞ্চলের সশস্ত্র গ্রুপগুলোর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বাইডেন জানিয়েছেন, ইরাক ও আফগানিস্তানে ওয়াশিংটনের আগ্রাসনের পর মার্কিন নীতি বদলাতে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ আমি গর্ব করে বলতে পারি যে, এই অঞ্চলে স্থল যুদ্ধের যুগ, যে যুদ্ধগুলোতে বিপুল সংখ্যক আমেরিকান বাহিনী জড়িত ছিল,তা আর চলছে না।’ সউদী গ্যাজেট, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন