হাইতিতে অপরাধী চক্রের সহিংসতায় শত শত মানুষের মৃত্যুর পর রাজধানী পোর্ট-আ-প্রিন্সের একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে শত শত শিশু। শিশু থেকে শুরু করে কিশোর বয়সের এসব শিশুরা ঘুমাচ্ছে ক্লাসরুমে। অভিজাত স্কুল সেইন্ট লুইস ডি গনজেগে আশ্রয় নিয়েছে এসব শিশুরা। গত ৭ জুলাই হাইতির সাইতি সোলেইল এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বি দুই অপরাধী চক্রের মধ্যে মারাত্মক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে এই সহিংসতা প্রায় তিনশ’ মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সহিংসতা এড়াতে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে শিশুরা। শুক্রবার স্কুলটিতে প্রবেশের পর দেখা যায় শিশুরা খেলায় মেতে আছে। ধর্মীয় গ্রুপ কিজিতো পরিবারের নান সিস্টার রোজেমিলিন বলেন, ‘এসব শিশুদের আরও অনেক সহায়তা প্রয়োজন। এরা যেখান থেকে এসেছে সেখানকার পরিস্থিতি সত্যিই খুব খারাপ। আমরা খাবারের অপেক্ষায় আছি কিন্তু যা পাচ্ছি তা শিশুদের জন্য সন্তোষজনক নয়’। স্থানীয় এক কমিউনিটি অর্গানাইজার জানান, সহিংসতা এড়াতে স্কুল ইউনিফর্ম পরে পালিয়ে আসে শিশুরা। এর মাধ্যমে অপরাধী চক্রকে আশ্বস্ত করতে পারে তারা স্কুলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ শিশু বাবা-মা ছাড়া একাই পালিয়েছে। অঞ্চল দখল নিয়ে গত ৭ জুলাই জি৯ ও জিপেপ চক্রের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শুক্রবার জানিয়েছে প্রায় তিনশ’ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এছাড়া ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, চক্রগুলো বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে আর সেগুলো ধ্বংস করতে ভারি যন্ত্র ব্যবহার হয়েছে। ১২৫টি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হাইতির কাছে অস্ত্র বিক্রিতে সর্বসম্মত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর দেশটির অপরাধী চক্রগুলোর সহিংসতা মারাত্মক হয়ে ওঠে। প্রায় এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইসি গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার পর থেকে দেশটিতে গ্যাং সহিংসতা বেড়েছে। হাইতিতে অবস্থিত জাতিসংঘের সমন্বয় কার্যালয় জানিয়েছে, এই বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫৪০ জনকে অপহরণ এবং ৭৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। গত বছরের শেষ পাঁচ মাসে ৩৯৬ জন অপহরণ ও ৬৬৮ জন নিহত হন। অপরাধী চক্রের সহিংসতার কারণে হাইতিতে জ্বালানি ও বিদ্যুতের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন