টেমস নদীর উৎপত্তিস্থলের অনেকটা জুড়ে পানির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। বিশ্বের বিরূপ আবহাওয়া ও আবহাওয়া পরিস্থিতিতে ধুঁকছে লন্ডন শহরের ভেতরে দিয়ে বয়ে চলা টেমস নদী। কম বৃষ্টিপাত আর জুলাই মাস জুড়ে তাপদাহে যুক্তরাজ্যে রেকর্ড তাপমাত্রায় নদীটির উৎপত্তিস্থলের অনেকটা জুড়ে পানির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। পশ্চিম ইংল্যান্ডের গ্লুচেস্টারশায়ারের কেম্বেল ও সোমারফোর্ড কেইনস এলাকায় নদীর তলদেশে শুকনো পাতা আর মরা ডালপালা পড়ে আছে। পাহাড় আর সবুজে ঘেরা কটসওল্ডস গ্রামীণ এলাকার অংশ সিরেন্সেস্টার থেকে শুরু হয়েছে টেমস নদী। এরপর তা রাজধানী লন্ডনের মাঝ দিয়ে বয়ে চলে গেছে উত্তর সাগরে। নদী নিয়ে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে কাজ করা রিভারস ট্রাস্ট সংগঠনটি জানিয়েছে, স্বল্প বৃষ্টিপাত আর খরায় নদীটি উৎপত্তিস্থল থেকে সোমারফোর্ড কেইনস পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার নিচের দিকে সরে গেছে। নদীর স্রোত প্রবাহও দুর্বল। রিভারস ট্রাস্টের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ক্রিস্টিন কোলভিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আইকনিক এই নদীর উৎসস্থলের যে চিত্র দেখতে পাচ্ছি, দুঃখজনকভাবে তা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতে যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি, তার প্রতীক। “যদিও গ্রীষ্মে নদীর উৎস শুকিয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, তবে পাঁচ মাইল পর্যন্ত নিচে চলে যাওয়া অকল্পনীয় ও অভূতপূর্ব বিষয়।” কোলভিন বলেন, “আবহাওয়া সংকট খরা ও তাপপ্রবাহসহ আরও বৈরী আবহাওয়া ডেকে আনছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। এই পরিস্থিতি নদীসমূহ এবং বিস্তৃত ভূমি এলাকায় গুরুতর হুমকি তৈরি করে।” ভবিষ্যত আবহাওয়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থিতিশীল ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে কোলভিন বলেন, গৃহস্থলী ও প্রধান অবকাঠামোগুলোর সমস্যা খুঁজে বের করা এবং সবুজ অবকাঠামোর অংশ হিসাবে টেকসই নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে। অগাস্টের কিছু সময়ে দেশ খরায় ভুগতে পারে তা আগেই সতর্ক করেছিল যুক্তরাজ্যের সরকার। আবহাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণ ইংল্যান্ডে ১৮৩৬ সালের পর এ বছরের জুলাইয়ের তাপমাত্রা রেকর্ড ছুয়েছে, বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ। গোটা দেশে জুলাইয়ে ২৩ মিলিমিটারের কাছাকাছি বা গড় বৃষ্টিপাতের ৩৫ শতাংশ হয়েছে।” পানি নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি কোম্পানি ইতোমধ্যে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের কিছু অংশে হোসপাইপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। দেশটির আবহাওয়া অফিস বলছে, এই উচ্চ তাপমাত্রা আগামী সপ্তাহে আবার ফিরতে পারে। তবে তা জুলাইয়ের রেকর্ড তাপমাত্রার কাছাকাছি নাও যেতে পারে। ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ফ্রান্সসহ কিছু দেশ গ্রীষ্মে তৃতীয় তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হচ্ছে এবং মহাদেশটির কিছু অংশ খরায় ভুগছে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন