তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ইউক্রেনের পাশাপাশি রাশিয়ার বন্দর থেকেও খাদ্যশস্য রফতানির জন্যও কাজ করছে আঙ্কারা। রাশিয়ায় একদিনের ঝটিকা সফর শেষে দেশে ফেরার পথে নিজ বিমানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এরদোগান। তিনি বলেন, আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত এ ব্যাপারে কাজ করছে। এর আগে শুক্রবার রাশিয়ার উপকূলীয় অবকাশ কেন্দ্র সূচিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন এরদোগান। দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে এ দুই নেতা আলোচনা করেছেন। গত ২২ জুলাই রাশিয়া, তুরস্ক, জাতিসংঘ ও ইউক্রেনের মধ্যে শস্য পরিবহণ চুক্তি হয়। এর আগে গত সোমবার সকালে রাজোনি নামের সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এটি ছিল ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর প্রথম শস্যবাহী জাহাজ। সাগরের একটি নিরাপদ করিডর দিয়ে এসব শস্যবাহী জাহাজ চলছে। এদিকে ইউক্রেনের শস্যবোঝাই আরও তিন জাহাজ কৃষ্ণসাগরে অপেক্ষা করছে। এগুলো তুরস্কের ইস্তানবুল প্রণালিতে প্রবেশের আগে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার এ কথা জানিয়েছে। জাহাজ তিনটি ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে আয়ারল্যান্ড, ব্রিটেন ও তুরস্ক যাবে। এগুলোর মধ্যে প্রথমটি পানামার পতাকাবাহী নেভি স্টার জাহাজটি গত শুক্রবার ওডেসা বন্দর থেকে ৩৩ হাজার টন শস্য নিয়ে বোঝাই করেছে। এটি আয়ারল্যান্ড যাবে। দ্বিতীয়টি মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ রোজেন। এটি ইউক্রেনের চরনোমরস্ক বন্দর থেকে ১৩ হাজার টন শস্য নিয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনে। আর তুর্কি পতাকাবাহী পোলারনেট নামে তৃতীয়টি জাহাজটি ১২ হাজার টন শস্য নিয়ে তুরস্ক যাচ্ছে। জাতিসংঘের উদ্যোগে এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের তিনটি বন্দর দিয়ে খাদ্যশস্য রফতানির চুক্তি হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর একে একে দখলে যেতে থাকে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো, বন্ধ হয়ে যায় শস্য রফতানি। দীর্ঘ ছয় মাসের অবরোধ শেষে শনিবার আবারও ইউক্রেনের বন্দরে পৌঁছেছে বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজ। ইউক্রেনের অবকাঠামো মন্ত্রী ওলেক্সান্ডার কুব্রাকভের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানা যায়, ইউক্রেনের চোরনোমর্স্ক বন্দরে নোঙ্গর করেছে বার্বাডোসের একটি পণ্যবাহী জাহাজ। ফুলমার নামের ওই জাহাজটি ইউক্রেনীয় শস্য বোঝাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। কৃষ্ণ সাগর তীরবর্তী বন্দরগুলো থেকে পুনরায় প্রতি মাসে ৩ মিলিয়ন টন শস্য রফতানির চেষ্টা চলছে বলে জানান ইউক্রেনের অবকাঠামো মন্ত্রী। কুব্রাকভ বলেন, ‘‘আমাদের বন্দরগুলো যেন আরও বেশি জাহাজ গ্রহণ করতে পারে এবং হ্যান্ডেল করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সবকিছু করছি। বিশেষ করে, আমরা দুই সপ্তাহের সময় মধ্যে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচটি জাহাজ পৌঁছতে পারে এমন পরিকল্পনা করছি।’’ দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরগুলো দিয়ে পুনরায় শস্য রফতানি শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে পণ্য রফতানিতে এবং বন্দরগুলোতে এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়ে গেছে বলে জানান তিনি। মিত্রদের প্রতি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার উস্কানি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হুমকি রয়ে গেছে, প্রত্যেকেরই এ বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। কিন্তু যদি আমাদের অংশীদাররা তাদের অঙ্গীকারের অংশ পূরণ করে এবং সরবরাহের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে এটি সত্যিই বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের সমাধান করবে।’’ আনাদোলু, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন