গত ৭ই জুন সিডনির একটি অ্যাপার্টমেন্টে খোঁজ নিতে যান অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ। কারণ তিন মাস ধরে তাদের কেউ দেখতে পাচ্ছিল না। তাদের বাড়ি ভাড়া বাকি পড়ে আছে আবার বাসার বাইরেও চিঠির স্তুপ জমে আছে। এগুলো দেখেই সন্দেহ হয় কর্তৃপক্ষের। তারা তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। ভেতরে গিয়ে তারা যা দেখে, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না তারা। বিবিসি জানিয়েছে, ওই বাসায় থাকতো সউদী আরব থেকে আসা দুই বোন। তাদের দুই জনের লাশ পাওয়া যায় ভিন্ন দুটি রুমে। মারা যাওয়ার পর সপ্তাহের পর সপ্তাহ কেটে গেলেও কেউ তাদের খোঁজ নিতে আসেনি। কিন্তু তাদের মৃত্যুকে ঘিরে জন্ম নিয়েছে আরও বড় রহস্যের। দুই মাস কেটে গেলেও কোনোভাবেই তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে না। মারা যাওয়া দুই বোনের একজন আসরা আব্দুল্লাহ আলসেহলি (২৪) এবং অপরজন আমাল আব্দুল্লাহ আলসেহলি (২৩)। তাদের বাসায় কেউ জোরপূর্বক ঢুকেছে এমন প্রমাণ নেই। তাদের দেহেও কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। এমনকি তাদের বিষ খাওয়ানো হয়েছে সেই প্রমাণও পাওয়া যায়নি। তাহলে তারা মারা গেলো কীভাবে? পুলিশ এই ঘটনাকে ‘সন্দেহজনক’ এবং ‘অস্বাভাবিক’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে যদি কোনো একটা ক্লু পাওয়া যায়। এ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্লাউডিয়া আলক্রোফট সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এই মেয়েদের সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না। আমরা আশা করছি, কেউ একজন আমাদের তদন্তে সাহায্য করবেন। জানা গেছে, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় চান ওই দুই বোন। তবে তারা কী কারণে আশ্রয় চেয়েছিলেন তা কর্তৃপক্ষ জানায়নি। তবে তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের হত্যা করেছে এমন কোনো প্রমাণ পুলিশ পায়নি। ওই দুই বোন অস্ট্রেলিয়ায় ট্রাফিক কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করতো। পাশাপাশি একটি ভোকেশনাল স্কুলে পড়াশুনাও করতো তারা। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, নিজেদের বিষয়ে খুব বেশি কিছু বলতো না তারা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এখনও স্পষ্ট কিছু বলছে না। তবে এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় কেসটি সবার আগ্রহে পরিণত হয়েছে। এটি আত্মহত্যা ছিল নাকি হত্যা? নাকি অন্যকিছু! স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়ে চলেছে। তবে পুলিশ সেগুলোর প্রমাণ নিশ্চিত করেনি। একটি অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, মৃতদের একজন সমকামি ছিলেন এবং পরিবারের ভয়ে ভীত ছিলেন। এবং অন্যজন ধর্মে বিশ্বাস করতেন না। সউদী আরবে সমকামিতা এবং ধর্মহীনতা এখনও অবৈধ। বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন