বুকারজয়ী ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার প্রক্রিয়া) থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং তিনি এখন কথা বলতে পারছেন। স্থানীয় সময় শনিবার তার এজেন্ট অ্যান্ড্রু উইলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছ ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। রুশদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় রয়েছে এমন একজন লেখক অতিশ তাসির টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, রুশদির শরীর থেকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট সরিয়ে নেয়া হলেও তিনি এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন। এদিকে, রুশদির উপরে আক্রমণে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। ইরান-সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একজন কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন যে, তাদের কাছে ছুরিকাঘাতের বিষয়ে কোনো অতিরিক্ত তথ্য নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না, তাই আমরা মন্তব্য করব না।’ হিজবুল্লাহ ইরান দ্বারা সমর্থিত, যার পূর্ববর্তী সর্বোচ্চ নেতা, আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি, ১৯৮৮ সালে একটি ধর্মীয় ডিক্রি ঘোষণা করেছিলেন যাতে তিনি ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ে ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য রুশদিকে হত্যা করার জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সন্দেহভাজন হামলাকারীকে নিউ জার্সির বাসিন্দা হাদি মাতার (২৪) বলে পুলিশ শনাক্ত করেছে। শনিবার তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। মাতার এবং তার পরিবার দক্ষিণ লেবাননের ইয়ারুন শহরের বাসিন্দা। সেখানকার মেয়র আলী তেহফে বলেছেন, মাতার বাবা-মা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন এবং মাতার সেখানেই জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। মাতার বা তার বাবা-মা হিজবুল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত বা সমর্থিত কিনা জানতে চাওয়া হলে, তেহফে বলেছিলেন যে, বাবা-মা বা মাতার বিদেশে বসবাস করায় তাদের রাজনৈতিক মতামত সম্পর্কে তার কাছে ‘কোন তথ্য নেই’। ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু ইরানের রাজধানীতে, দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক কয়েকজন লেখককে লক্ষ্য করে হামলার জন্য প্রশংসা করেছেন যে তারা বিশ্বাস করে যে তার ১৯৮৮ সালে লেখা বই দিয়ে ইসলাম ধর্মকে কলঙ্কিত করেছে। ২৭ বছর বয়সী ডেলিভারিম্যান রেজা আমিরি বলেন, ‘আমি সালমান রুশদিকে চিনি না কিন্তু আমি শুনে খুশি যে সে ইসলামের অবমাননা করার কারণে তার ওপর হামলা হয়েছে। যারা পবিত্রতার অবমাননা করে তাদের জন্য এটাই পরিণতি।’ তেহরানের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ মাহদি মোভাঘর রুশদির উপর হামলা দেখে ‘ভালো অনুভূতি’ বলে বর্ণনা করেছেন। ‘এটি আনন্দদায়ক এবং দেখায় যারা আমাদের মুসলমানদের পবিত্র জিনিসগুলিকে অবমাননা করে, আখিরাতে শাস্তির পাশাপাশি, এই পৃথিবীতেও মানুষের হাতে শাস্তি পাবে,’ তিনি বলেছিলেন। সূত্র : আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন