বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

টমেটো ফ্লু আতঙ্ক ভারতে

লাসা জ্বর করোনার চেয়ে মারাত্মক ভাইরাস নাইজেরিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি ভারতে দেখা যাচ্ছে নতুন এক ভাইরাস। ‘টমেটো ফ্লু’ নামে এই নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত ভাইরাসটি মানুষের হাত, পা ও মুখে আক্রমণ করে। কেরালা ও ওড়িশায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। খবর এনডিটিভির। ল্যানসেট রেসপিরেটরি জার্নাল অনুসারে, টমেটো ফ্লু-এর ঘটনা প্রথম কেরালার কোল্লামে ঘটে যা ৬ মে রিপোর্ট করা হয়েছিল। তখন থেকে ৮২ জন শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। আক্রান্ত সব শিশুর বয়স ৫ বছরের কম। ল্যানসেটের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তারা ইতোমধ্যে করোনার চতুর্থ তরঙ্গের সম্ভাব্য উত্থানের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। এরমধ্যে টমেটো ফ্লু বা টমেটো জ্বর নামে পরিচিত একটি নতুন ভাইরাস ভারতের কেরালা রাজ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে আবির্ভূত হয়েছে। সংক্রামক রোগটি অন্ত্রের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এটি বিরল কারণ তাদের সাধারণত ভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম থাকে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে লাল, বেদনাদায়ক ফোসকা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে ফোসকাগুলো টমেটোর আকারে বড় হয়ে যাওয়ার কারণে সংক্রমণটির নামকরণ করা হয়েছে টমেটো ফ্লু। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর, শরীরে ব্যথা, জয়েন্ট ফুলে যাওয়া ও ক্লান্তি। এর লক্ষণগুলো অনেকটা চিকুনগুনিয়ার মতো। কিছু রোগী বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, জ্বর, পানি শূন্যতা, ফোলা জয়েন্ট ও শরীরের ব্যথার কথাও রিপোর্ট করেছেন। ল্যানসেটের মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত কেরালার অন্যান্য এলাকাগুলি হল আঁচল, আরিয়ানকাভু ও নেদুভাথুর। কেরালার প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকে একটি সতর্কতা জারি করেছে ল্যানসেট। অপরদিকে, প্রাণঘাতী করোনার পর এখন আরেক মহামারী হানা দিয়েছে আফ্রিকান দেশ নাইজেরিয়াতে। দেশটির এক প্রদেশে ইবোলার অনুরূপ একটি তীব্র রক্তক্ষরণজনিত রোগ লাসা জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এই ধরনের জ্বরে রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায় ও এর জমাট বাঁধার ক্ষমতা হ্রাস পায়। যার ফলে রোগীর অভ্যন্তরীণ রক্তপাত শুরু হয়। আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিন পর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে বলেও জানা গেছে। খবর আল-জাজিরার। যদিও সংক্রমিতদের ৮০ শতাংশ রোগী এই ভাইরাসে খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে না। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ লক্ষণহীন থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে, মাথা ও পেশী ব্যথা, গলা ব্যথা, বমি বমি ভাব ও জ্বর। প্রাথমিকভাবে, এগুলো এই অঞ্চলের একটি সাধারণ রোগ ম্যালেরিয়ার লক্ষণ থেকে আলাদা করা যায় না। নাইজেরিয়ার ওও শহরের ফেডারেল মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালের ল্যাবরেটরি রাজ্যে একমাত্র যারা লাসা ডায়াগনস্টিক রক্ত পরীক্ষা করে। এর ফলাফল শুধুমাত্র দুই দিন পরে পাওয়া যায়। এই সকল কারণে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে নাকি তা অনেক দেরিতে জানা যায়। ফলে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পরে। ওও নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে একটি কৃষি বাজার কেন্দ্র। লাসা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল এই শহর যা এই বছরের শুরুতে এই রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এই পর্যন্ত এই ভাইরাসে এই শহরে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নাইজেরিয়ার এই অংশে মানুষ লাসা ভাইরাসকে করোনা ভাইরাস থেকে অনেক বেশি ভয় পায়। হাসপাতালের ইনফেকশন কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার অনুসারে, অনডো প্রদেশে যেখানে ওও অবস্থিত সেখানে ২০২০ সাল থেকে লাসায় আক্রান্ত ১৭১ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে করোনায় ৮৫ জন মারা গেছে। এনডিটিভি, আল-জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন