চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দুই দেশের দ্বন্দ্বে তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনা বেড়েই চলছে। মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের পরই এই উত্তেজনা বাড়ে। এরপর মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল তাইওয়ান সফরে আসে। রোববার তাইপে এসে পৌঁছেছেন মার্কিন অঙ্গরাজ্য ইন্ডিয়ানার এক গভর্নর। ফলে চীনও উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া অব্যাহত রেখেছে। তাইওয়ান ঘিরে ৩০ যুদ্ধবিমান ও পাঁচ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে চীন। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মহড়া চলাকালীন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড নতুন করে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান এবং পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালিতে মোতায়েন করেছে, যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ তাইওয়ান সরকার। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অন্তত ১৭টি চীনা সামরিক বিমান ও পাঁচটি জাহাজকে তারা অনুসরণ করতে পেরেছে যার মধ্যে আটটি বিমান তাইওয়ান প্রণালির মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক জল ও আকাশসীমা আইন অনুযায়ী, এই রেখাকে আসলে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে বিভাজন রেখা হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু চীন যেহেতু তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে, তাই তারা কোনোদিনই ঐ বিভাজন রেখাকে মানে না। তাইওয়ান সরকার জানিয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মির যে আটটি সামরিক বিমান মধ্যরেখা অতিক্রম করেছিল, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি শিয়ান জেএইচ-৭ বোমারু বিমান, দুটো সুখোই সু-৩০ যুদ্ধবিমান ও দুটো শেনইয়াং জে-১১ জেট। চীনের এই অতি তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে তাইওয়ান প্রণালিতে নজর রাখতে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও যুদ্ধ জাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেম মোতায়েন করেছে। এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি দাবি করেছে, তাইওয়ানের একেবারে নাকের ডগায় পেংঘু দ্বীপের ওপরে নজরদারি চালাচ্ছে তাদের বিমান। তাইওয়ান বিমানবাহিনীর ভাইস চিফ অব স্টাফ টুং পেই-ইউন অবশ্য চীনের সেই দাবি নস্যাৎ করেছেন। তিনি বলেন, চীন সব সময়েই চাপ বজায় রাখার জন্য বাড়িয়ে বাড়িয়ে কথা বলে। এদিকে তাইওয়ান নিয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। অতিসম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবি করেছেন আমেরিকান পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। ওয়াশিংটনের সেই সিদ্ধান্ত সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে তাইওয়ানের ওপরে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। যা চীন মোটেও ভালো চোখে দেখবে না বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তবে প্রাইস স্পষ্টই বলেছেন, ‘চীন গোটা অঞ্চলের (তাইওয়ান প্রণালি) স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে চায়। আমরা তা হতে দেব না। আমাদের আগামী কিছু পদক্ষেপেই তা সকলে বুঝতে পারবেন।’ রয়টার্স, বিবিসি, এবিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন