পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মেয়ে শারমিন আহমেদ এবং তানিয়া আহমেদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গতকাল বুধবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-র্যাব গ্রেফতার করে হাইকোর্টে হাজির করে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা নেই। এ কারণে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। বুধবার ভোটের গ্রেফতারের পর গতকাল দুপুরে তাদের হাইকোর্টে হাজির করা হয়। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন।শর্তের মধ্যে রয়েছে,পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা বোর্ডের কাছে ৩০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। কেউ যাতে বিদেশ পালাতে না পারে তাই দুইবোন সহ পরিবারের ১১ জনের পাসপোর্ট,এনআইডি জমা দিতে হবে। শর্তপূরণ সাপেক্ষে তারা র্যাব হেফাজত থেকে মুক্তি পাবেন। এর আগে রাজধানীর ধানমন্ডি ও শ্যামলী থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই বোনকে গ্রেফতার করে র্যাব।পরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন,পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।তিনি ছিলেন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী।দায়িত্বে থাকাকালে অন্তত: ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থআত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।পিকে হালদারের অর্থ আত্মসাতের মামলায় খবিরউদ্দিনকে আসামি করা হলেও তিনি এখন জামিনে রয়েছেন।
জানাগেছে, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন আহমেদ নিজে ও তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় অন্তত: ২শ’ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।এরমধ্যে তার দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ৬৪ কোটি।পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৮ জুলাই কানাডা থেকে তারা দেশে ফেরেন।ধানমন্ডি ও শ্যামলির দুটি বাসায় দুই মাস ধরে তারা অবস্থান করছেন-এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব তাদের আটক করে।
এদিকে দুদক সূত্র জানায়,পিকে হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হলেও ওইসব মামলায় শারমিন আহমেদ এবং তানিয়া আহমেদকে আসামি করা হয়নি।ফলে দুদকের কোনো মামলায় গতকাল তাদের গ্রেফতার দেখানো যায় নি।
চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।পরে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল তাদের গ্রেফতার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন।১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।পরবর্তীতে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।অর্থ আত্মসাতের দায়ের মামলা হলে আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন