ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ভারতে গুরুর দুধের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে দুগ্ধশক্তির পাওয়ার হাউস হিসাবে পরিচিত ভারতের ডেইরি শিল্প তীব্র সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
ন্যাশনাল ডেইরি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা সঙ্কট মোকাবেলা করতে মহিষের নতুন জাতের বিকাশ থেকে শুরু করে প্রোটিন সামগ্রীর জন্য গুল্ম জাতীয় ফসলের পরীক্ষা করা পর্যন্ত সমস্ত কিছুর উপর গবেষণা চালাচ্ছেন। তারা গবেষণা করে জানতে পারেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে গবাদি পশুদের মধ্যে দুধের উৎপাদন ১১ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী দেশ। প্রতি বছর তারা ২০ কোটি টনেরও বেশি দুধ উৎপন্ন করে। দুগ্ধ শিল্প, যা সারা দেশের ৮ কোটি মিলিয়ন কৃষকের উপর নির্ভর করে, বর্তমানে ভারতের অর্থনীতিতে প্রায় 5 শতাংশ অবদান রাখে। চরম আবহাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকে চ্যালেঞ্জ করছে। গত সপ্তাহে দুধের দাম ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি এ বছর পশুর খাদ্যের খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতে প্রায় ৩০ কোটি গরু আছে। দুধ উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকই আসে মহিষ থেকে, এবং এক চতুর্থাংশের কিছু বেশি হয় ক্রসব্রিড গবাদি পশু থেকে, যা ইউরোপীয় জাতের উচ্চ ফলনের সাথে দেশীয় গবাদি পশুর স্থিতিস্থাপকতাকে একত্রিত করে। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, যেহেতু দেশটি ভাল ফলনের কারণে ক্রসব্রিডের ভাগ বাড়িয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মহিষ এবং দেশি গবাদি পশুর মতো ক্রস ব্রিডগুলি গরমের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না। ফলে তাদের দুধের পরিমাণ অনেক কমে যাচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের মুকারি গ্রামের কৃষক বিজেন্দর সিং-এর তিনটি মহিষ ও একটি গরু রয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে, প্রায় ১৫ বছর আগে, উচ্চ তাপমাত্রার সময় গ্রামবাসী তাদের গবাদি পশুকে কাছাকাছি নদীর ধারে নিয়ে যেত। তিনি বলেন, ‘এখন সেই নদী এতটাই দূষিত যে সেখানে গবাদি পশু যেতে পারে না। গ্রামের অন্য জলাশয়গুলিও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’
এই গ্রীষ্মে, তিনি বলেন, তিনি তার গবাদি পশুকে ছাদ দেয়া উঠানে রাখেন ও তাদেরকে ফ্যান দিয়ে বাতাস দেন। এবং দিনে দুবার তাদের গোসল করিয়ে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছেন। ‘তাপ এবং তাপমাত্রা সরাসরি দুধ উৎপাদনকে প্রভাবিত করে,’ তিনি বলেন, ‘তাই আমরা আমাদের গবাদি পশুদের কিছুটা স্বস্তি দিতে সাধ্যের মধ্যে যা করতে পারি, তাই করি।’ সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন