শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নিজের জমিতে ধান রোপণ করছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারাণী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:০১ পিএম

তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী। তিনবারের নির্বাচিত বিধায়ক। অথচ দেখলে বোঝা যায় না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যখন প্রতিদিনই গণমাধ্যমে নেতা-মন্ত্রীদের কাড়ি কাড়ি টাকার ছবি ভাসছে, তখন তিনি ব্যতিক্রম। অতিসাধারণ জীবনযাত্রাতেই স্বচ্ছন্দ তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারাণী সচরাচর খবরের শিরোনামেও আসেন না। থাকেন প্রচারের অন্তরালে।
তবে সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে হঠাৎ ভারতীয় গণমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। মন্ত্রী হয়েও তাঁর সরলতা মুগ্ধ করেছে সাধারণ মানুষকে। আদিবাসী নারী সন্ধ্যারাণীকে দেখা গিয়েছে নিজের ধান ক্ষেতে আর পাঁচজনের সঙ্গে মেতে উঠেছেন ধান রোপণের কাজে। সঙ্গে কোনো পাইক-বরকন্দাজ বা মিডিয়ার ভিড় নিয়ে নয়। একেবারে গ্রাম্য নারীর মতোই কাঁদায় নেমে ধান রোপণ করছিলেন তিনি। মিডিয়া এই খবর পেতেই সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল সন্ধ্যারাণী।
এমনিতেই তাঁর মন খারাপ। এবার মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেরিতে। আমন ধান লাগাতে বেশ দেরি হয়ে গিয়েছে। তাঁর কাঁধে সংসার ছাড়াও রয়েছে মন্ত্রিত্ব ও দলনেত্রীর দায়িত্ব। স্বামী স্কুলশিক্ষক গুরুপদও তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় নেতা। বর্তমানে জেলা পরিষদের সচিবও। তিনিও সময় পেলেই নেমে পড়েন ধান ক্ষেতে।
মন্ত্রী হয়েও রঙিন দুনিয়া ছেড়ে ধানের চারা রোপণ করতে কেমন লাগছে, এ প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। তাঁর জবাব, ‘চাষ করি আনন্দে...! ফি বছরই নিজের জমিতে এভাবে ধানের চারা রোপণ করি। নিজের কাজ নিজে করতেই ভালো লাগে।’
সন্ধ্যারাণীর প্রতিবেশীরাও জানেন তাঁর এমন আচরণ, তাই তাঁরা খুব একটা অবাক হন না। আদিবাসী সমাজের একজন হয়েই থাকতে চান তিনি। তবে এ জন্য কটাক্ষ কম হজম করতে হয়নি তাঁকে। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা বলেছেন, ‘পুরোটাই নাটক। মানুষের সহানুভূতি আদায়ের জন্যই ধান খেতে নেমেছেন সন্ধ্যারাণী।’ সিপিএমের সারা ভারত কৃষক সভার পুরুলিয়ার সভাপতি বিপত্তারণ শেখরের কটাক্ষ, ‘আগামী নির্বাচনে হেরে যাবেন। পরে যাতে অসুবিধা না হয় তাই এখন থেকে ফের ধান চাষ শুরু করেছেন।’
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের এখনো প্রায় ৪ বছর দেরি। তাই বিরোধীদের এমন অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ গুরুপদ। তিনি বলেছেন, মমতা ব্যানার্জির সাদামাটা জীবনযাপন তাঁদের আদর্শ। সেই সঙ্গে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে তাঁরা ভালোবাসেন। তাই ধান রোয়ার মধ্যে কোনো অপরাধ বা অহংকারবোধ তাঁদের নেই। আদিবাসী দম্পতি আত্মতৃপ্তির জন্যই চাষের জমিতে নেমে পড়েন, প্রচারে আলোয় তাঁদের কিছু যায় আসেনা। বরং লজ্জা করে, বললেন সন্ধ্যারাণী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন