এবারের গ্রীষ্মে উত্তর গোলার্ধে যে বিপজ্জনক মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে তা চলতি শতাব্দির শেষ নাগাদ প্রায় তিন থেকে দশ গুণ বেশি হবে। পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে এই তাপপ্রবাহ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ মানব সৃষ্ট কারণে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব ত্বরান্বিত হচ্ছে বলে নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত সমীক্ষায় জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান এবং পশ্চিম ইউরোপের মতো মধ্য-অক্ষাংশের দেশগুলোতে তাপপ্রবাহের মাত্রা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ‘বিপজ্জনক তাপ’ ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং তার উপরের হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে বিপজ্জনক মাত্রার গরমের দিনের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হবে। মারাত্মক তাপপ্রবাহ বর্তমানে মধ্য-অক্ষাংশে বিরল। তবে এখন থেকে এই অঞ্চলে প্রতি বছর এটি দেখা দিবে। উদাহরণ হিসাবে বলা হয়েছে, শিকাগোতে ২১০০ সালের মধ্যে বিপজ্জনক তাপপ্রবাহ ১৬ গুণ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এই অঞ্চলে বছরের বেশিরভাগ দিন মানুষ বিপজ্জনক তাপের সংস্পর্শে আসতে পারে। ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক তাপের’ দিনগুলো- যা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়া হিসাবে সংজ্ঞায়িত - তা দ্বিগুণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তাপের এই মাত্রা মানুষের বেঁচে থাকার সীমাকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লুকাস ভার্গাস জেপেটেলো বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক গ্রীষ্মের রেকর্ড ব্রেকিং তাপপ্রবাহ উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মতো জায়গায় অনেক বেশি নিয়মিত হয়ে উঠবে। ২১০০ সালের মধ্যে নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অনেক জায়গায় বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় বাইরে কাজ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, এমনকি যদি আমরা এখনই কার্বন নির্গমন রোধ করতে শুরু করি।’ রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন