পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি (এনডিএমএ) কর্তৃক প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান অনুসারে, গত জুন মাস থেকে হওয়া মৌসুমী বন্যায় দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১০৩৩ এ দাঁড়িয়েছে।
গতকাল রোববার সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় গত ২৪ ঘন্টায় ১১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ঐতিহাসিক মৌসুমী বৃষ্টিপাত এবং বন্যা তিন কোটিরও বেশি মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এ পরিস্থিতিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ব্যাপক মানবীয় বিপর্যয়” বলে অভিহিত করেছেন। বন্যা মোকাবেলায় দেশটির জাতীয় ও প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের সাথে সেনাবাহিনী যোগ দিয়েছে।
গত শনিবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তান পরিদর্শন করেছেন, যেটি বৃষ্টির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।
দেশটির নেতৃবৃন্দ সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন এবং একটি আন্তর্জাতিক আপিল তহবিল গঠন করার পরিকল্পনা করেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতঃমধ্যে তুরস্ক উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য একটি দল পাঠিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্যোগে ক্ষতির মাত্রা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি।
এদিকে বিশিষ্ট দায়ী, ওয়ায়েজ মাওলানা তারিক জামিল পাকিস্তানের বন্যাকবলিতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মাওলানা তারিক জামিল গত কয়েকদিন ধরে বন্যাকবলিতদের পাশে তার ফাউন্ডেশন এমটিজের পুরো টিম নিয়ে কাজ করছেন। তিনি পাকিস্তানসহ পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে পাকিস্তানের বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াদে আহ্বান জানান।
গতকাল শনিবার তার ফেসবুক অফিসিয়াল পেজে এক ভিডিও বার্তা তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে এত বড় বন্যা হয়েছে এটা আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টির লক্ষণ। হজরত মুসা আ. আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহ আপনি যখন নারাজ বা অসন্তুষ্ট হোন তখন কী করেন।
আল্লাহ তায়ালা উত্তর দিলেন আমি অসন্তুষ্ট হলে তুফান ও বৃষ্টিকে লাগামহীন করে দেই। পাকিস্তানে বন্যা তুফানের যে অবস্থা আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের তওবা করা দরকার। বেশি বেশি এস্তেগফার করা দরকার। আল্লাহ যেনো আমাদের গুনাহ ক্ষমা করেন।
যে যে গুনাহে যারাই লিপ্ত আছেন তারা সে গুনাহগুলো থেকে ক্ষমা চাওয়া দরকার। এ কঠিন বন্যায় কারো ঘর উজাড় হয়েছে কারো বাচ্চা ঢুবে গিয়েছে, কারো আত্মীয় সজন হারিয়ে গেছে।
এ কঠিন অবস্থায় যার যতটুকু সমর্থন আছে তা নিয়ে এগিয়ে আসা দরকার। এখনো অনেক মানুষ আছে যার কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব বন্যায় হারিয়ে গেছে। আমি করাচির ভাইদের বলবো আপনারা সিন্দবাসীদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। আপনারা বেলুচিস্তানবাসীর সাহায্যে এগিয়ে আসুন।
এ কঠিন বন্যা পাঞ্জাবেও হতে পারে করাচিতেও হতে পারে। তাই যারা আজ এ সমস্যায় পড়েছে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। তাদের অসহায়ত্বে আমরা হয়ত সব কষ্ট লাঘব করতে পারবো না। কিন্তু তাদের এ কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ালে তারা ঠাঁই পাবে। তাদের অসহায়ত্ব ঘুচবে।
বিশেষ করে কোটাবাসীদের বলবো আপনারা অনেক অর্থশালী আপনারা বেলুচিস্তানের ভাইদের পাশে দাঁড়ান। সরকারকে বলবো আপনারা অসহায়দের পাশে দাঁড়ান। সূত্র : আল জাজিরা, ডন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন