রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সমাজের ভেঙে পড়া রোধে ধনীদের ওপর কর বাড়াতে হবে : গবেষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৪ এএম

জার্মানির বার্লিনে জার্মান ফেডারেল প্রেস কনফারেন্সে মঙ্গলবার আবহাওয়া সঙ্কট নিরসনে সুনির্দিষ্ট উপায় সম্পর্কে সকলের জন্য পৃথিবী প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ধনী-দরিদ্রে বৈষম্য বাড়ছে, তীব্র হচ্ছে আবহাওয়া পরিবর্তনের খারাপ প্রভাব। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই ঝুঁকি এড়াতে ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি বিত্তশালীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তাদের ওপর আরো বেশি কর আরোপ করে সেই অর্থে তহবিল গঠন করতে হবে। আর এই তহবিলের অর্থ ব্যয় হবে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধকরণ খাতে। এই মন্তব্য করেছেন জর্জেন রান্ডার্স মঙ্গলবার জার্মানির বার্লিনে জার্মান ফেডারেল প্রেস কনফারেন্সে। আবহাওয়া সংকট নিরসনে সুনির্দিষ্ট উপায় সম্পর্কে ‘সকলের জন্য পৃথিবী’ শীর্ষক প্রতিবেদন পেশের শুরুতে তিনি এ মন্তব্য করেন। রান্ডার্স সীমাহীন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করা ৫০ বছর আগের একটি প্রভাবশালী প্রতিবেদনের একজন লেখক। জর্জেন রান্ডার্স একজন নরওয়েজিয়ান শিক্ষাবিদ। তিনি ১৯৭২ সালে ক্লাব অফ রোম থিংক ট্যাংক থেকে প্রকাশিত ‘লিমিটস টু গ্রোথ’ বইয়ের লেখকদের একজন। তিনি বলেছেন, দেশগুলো আবহাওয়ার পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর জন্য সমর্থন পেতে সংগ্রাম করে চলেছে। কারণ বর্তমান অনেক নীতিই নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ওপর বোঝার মতো কাজ করে। তারা ইতিমধ্যে আর্থিক দিক দিয়ে সংগ্রাম করছে। তিনি আরো বলেছেন, ‘মানুষের খারাপ সময় যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে আমি মনে করি দুর্বল দেশগুলোতে সামাজিক ভাঙন দেখা দেবে। যার ফলে এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা সামাল দিতে সরকারগুলো ব্যর্থ হবে।’ গবেষণায় দেখানো হয়েছে, বিশ্বের ধনীদের ১০ শতাংশ সারা বিশ্বের অর্ধেক কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। নতুন প্রতিবেদনে যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, ধনীদেরই এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। রান্ডার্স বলেছেন, ‘ধনীরা যদি অর্থ প্রদান না করে তাহলে আমরা বৈশ্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় শক্তিশালী যৌথ পদক্ষেপের জন্য ভোটে সমর্থন পাব না।’ পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের প্রধান এবং সর্বশেষ প্রতিবেদনের একজন লেখক জোহান রকস্ট্রোম পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কোটি কোটি মানুষ ইতিমধ্যে ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রহের টিপিং পয়েন্টগুলো অতিক্রম করলে, উদাহরণস্বরূপ আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোত কমে গেলে এই অবস্থা আরো দ্রæত খারাপের দিকে যেতে পারে। তিনি আরো বলেছেন, জার্মানির মতো দেশগুলোতে যেখানে উচ্চ মাত্রার অর্থনৈতিক বৈষম্য রয়েছে তাদের একটি উপায় বের করতে হবে। যাতে কম কার্বন নিঃসরণ করে অর্থনীতি সচল রাখা যায় এবং আর্থিক সমস্যায় থাকা দেশগুলোর ক্ষতি না হয়। ‘সকলের জন্য পৃথিবী’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির লেখকরা বলেছেন, ক্রমহ্রাসমান সমৃদ্ধি কেবল উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই নয়, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রজুড়েও দেখা যাবে। তাই সতর্ক হতে হবে, না হলে মন্দার কারণে সরকারগুলো পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। তাদের দেওয়া পরামর্শে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের দায়ী ১০ শতাংশ ধনী ব্যক্তি এবং কম্পানিগুলোর ওপর কর বৃদ্ধি করে তহবিল গঠন করতে হবে। তবেই কমে আসবে সমাজের ভেঙে পড়ার ঝুঁকি। এপি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন