শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে, দাবি জান্তাপ্রধানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৩৩ পিএম

মিন অং হ্লেইং, ছবি : রয়টার্স


সেনা অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হওয়ার পর দেশজুড়ে যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির ‍সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন দেশটিতে ক্ষমতাসীন জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। -রিয়া নভোস্তি

তিনি আরও বলেছেন, আগামী বছর আগস্টে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনকে সফল করতে সেনাবাহনী তার ‘সর্বশক্তি’ দিয়ে চেষ্টা করবে। এক সরকারি সফরে বর্তমানে মস্কো আছেন জান্তাপ্রধান। রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে মস্কোর সঙ্গে বৈঠক করাই চলতি এ সফরের উদ্দেশ্য। মঙ্গলবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্লেইং বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে।’

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদ করে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় অং সান সুচিকে এবং তার বিরুদ্ধে আনা হয় একরাশ দুর্নীতির অভিযোগ। মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোর বিশেষ আদালতে বর্তমানে বিচার চলছে অং সান সুচির। কয়েকটি মামলায় তার সাজা ঘোষণা করে রায়ও ঘোষণা করেছেন আদালত।

অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী শক্তি ও সাধারণ জনগণ। প্রথম পর্যায়ে বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি, জলকামান, রবার বুলেট ব্যবহার করা হলেও একসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা। দেশটির রাজনৈতিক কয়েদিদের আইনী সহায়তা দানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় বছরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমার জুড়ে ২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং কারাগারে বন্দি করা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার বিক্ষোভকারীকে।

এদিকে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরুর পর গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন শক্তিও নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হওয়া শুরু করে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি ছায়া সরকার গঠিত হয়, যা মূলত দেশটিতে সক্রিয় বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের জোট। তবে রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জান্তাপ্রধান দাবি করেন, গত বছর মিয়ানমার জুড়ে ব্যাপকমাত্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত নানা ঘটনা ঘটা শুরু হয়েছিল; কিন্তু চলতি বছর এপ্রিল থেকে সেসব কমে আসছে। যদিও এই হ্রাস ধীর গতিতে ঘটছে, তবু ইতোমধ্যে শান্তি ফিরে আসার প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে মিন অং হ্লেইং আরও জানান, আগামী আগস্টে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের যে পরিকল্পনা জান্তার রয়েছে, তা বাতিলের কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। আমরা জাতিকে নিকট ভবিষ্যতের মধ্যেই সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তার সর্বশক্তি দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টা করবে। এবং সেই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত,’ রিয়া নভোস্তিকে বলেন হ্লেইং।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন