মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আধিপত্য বিস্তারে আরো শক্তিশালী হবে চীন

মধ্য এশিয়াকে বদলে দিতে আসছে নতুন রেলপথ

দ্য ইকোনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাশিয়া একসময় মধ্য এশিয়াতে রেলপথের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেছে, কিন্তু এখন ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন হচ্ছে। একদিকে, আধিপত্যের শূন্যতা রেখে বিশ্বের শীর্ষ পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়েছে, অন্যদিকে, বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ পরাশক্তি রাশিয়া ইউক্রেন নিয়ে ব্যস্ত। বিশ্বের তৃতীয় পরাশক্তি হিসেবে উদীয়মান চীন এটিকে তার প্রভাব বিস্তার এবং ইউরোপে বাণিজ্য পথকে বৈচিত্র্যময় করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও পরস্পরের সাথে এবং চীনের সাথে নতুন সংযোগ চাচ্ছে। ফলে আগামী ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর সমরকন্দে অনুষ্ঠিতব্য রাশিয়া ও চীনসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলোর জোট ‘সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার’ শীর্ষ সম্মেলনে তারা এঅঞ্চলে নতুন রেলপথ তৈরি নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মধ্য এশিয়ার এ রেলপথ সংক্রান্ত অগ্রগতির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মে মাসে কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভ ঘোষণা করেন যে, ২০২৩ সালে চীন, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানকে সংযোগকারী একটি রেলপথের নির্মাণ শুরু করা হবে। নতুন রেলপথটি তুর্কমেনিস্তান, ইরান ও তুরস্ক হয়ে চীন থেকে ইউরোপে যাওয়ার উপায় খুলে দেবে, যা পথযাত্রা প্রায় ৯শ’ কিলোমিটার এবং আট দিন কমিয়ে দেবে। আরো গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি রাশিয়ার সীমান্ত ঘুরে যাবে, যা দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কারণে এর স্তিমিত হয়ে পড়া পণ্য স্থানান্তরকে সহজ করে দেবে।

চায়না কমিউনিকেশনস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাসোসিয়েশনের ইয়াং জি বলেন, ‘যুদ্ধ ইউরোপীয় গ্রাহকদের মধ্যে মহা-অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। অনেকে রাশিয়া অঞ্চল পার হওয়ার জন্য জাহাজে করে ঘুর পথে ক্যাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে ধীরগতির, ব্যয়বহুল রেল ও সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে। নতুন রেলপথটি চীন ও ইউরোপের মধ্যে একটি বিকল্প, অ-রাশিয়ান, একমাত্র রেলপথ হয়ে উঠবে।’

কিরগিজস্তানের পরিবহনমন্ত্রী এরকিনবেক ওসোয়েভ বলেছেন যে, এ রেল সংযোগ আন্তর্জাতিক ট্রানজিট বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়াবে। তিনি অনুমান করছেন যে, এর মাধ্যমে বছরে ৭ থেকে ১৩ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন ঘটবে। ওসোয়েভ বলেন, ‘চীন, কিরগিজস্তান এবং উজবেকিস্তান ২শ’ ৮০ কিলোমিটার সমঝোতার পথে সম্মত হয়েছে। এটির জন্য ৪.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে’।

নতুন রেলপথ চীনের সীমান্তের টোরুগার্ট পাস থেকে পশ্চিম কিরগিজস্তানের জালালাবাদ পর্যন্ত পাবে, যা ইতিমধ্যে ১৯১৬ সালে রাশিয়ানদের দ্বারা নির্মিত একটি রেলপথ দ্বারা উজবেকিস্তানের সাথে সংযুক্ত। মাকমাল, একটি সোনার খনির অঞ্চল, যেখানে চীনা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আছে, সেখানে এর গেজ পরিবর্তন হবে। ওসোয়েভ বলেন, ‘ভূতাত্ত্বিক জরিপ শীঘ্রই শুরু হবে এবং এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষাটি মার্চের মধ্যে শেষ হবে।›

উল্লেখ্য, চীনের অন্য একটি রেলপথ ইতিমধ্যেই কাজাখ্স্তান হয়ে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কাজাখ্স্তান চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং স্থলপথে আমদানি ও রপ্তানির জন্য দ্রুত চীনের পশ্চিম দার হয়ে উঠছে। সেখান থেকে রাশিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একটি প্রধান বাণিজ্য পথ হয়ে উঠেছে। এটি ইউরোপের সাথে চীনের রেলওয়ে বাণিজ্যের সিংহভাগ বহন করে, যা ২০১৬ সালে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১ সালে প্রায় ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন