রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে বলা হত ফ্যাশন আইকন, জীব্নভর নানা রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতায় মাথার মুকুট থেকে শুরু করে দুর্দান্ত সব নকশার অলঙ্কারে সাজতেন তিনি। আর সেসবের মধ্যে রয়েছে ৩০০ হীরার সুক্ষ্মকাজের বড়সর একটি হার, যা তাকে দিয়েছিলেন ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজাম। রানির মৃত্যুর দুদিন পর শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে রানিকে দেওয়া হায়দ্রাবাদের শাসকের উপহারের তথ্যটি তুলে ধরা হয়। রানি উপহার হিসেবে হারটি পেয়েছিলেন ১৯৪৭ সালে তার বিয়েতে। তখন তিনি প্রিন্সেস। সিংহাসনে আরোহনের পাঁচ বছর আগে প্রিন্স ফিলিপকে বিয়ে করেন রানি। রানির বিয়ের সময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনাধীন হায়দ্রাবাদের নিজাম বা রাজা ছিলেন মীর ওসমান আলী খান, তিনি সপ্তম আসাফ জাহ নামে শাসনকর্তা হয়েছিলেন। তখন বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তাই ব্রিটিশ রানিকে বিপুল রত্নখচিত দুর্মূল্যের উপহার দেওয়া তার জন্য কষ্টসাধ্য কোনো ব্যাপার হয়নি। আসাফ বিশ্বের নামজাদা অলঙ্কার প্রস্তুতকারক ফরাসি কোম্পানিকে বলেছিলেন, তাদের সংগ্রহে থাকা সব ধরনের অলঙ্কার যেন রানির সামনে মেলে ধরা হয়। তাহলে সেখান থেকে কোন একটি গয়না রানি নিজের জন্য বেছে নিতে পারেন। অর্থাৎ হায়দ্রাবাদ থেকে দেওয়া উপহার যেন রানি স্বয়ং নিজে পছন্দ করার সুযোগ পান। নিজামের কথা মতোই কাজ হয়েছিল। তারা তাদের সব গয়নাগাটি নিয়ে হাজির হয় রানির সামনে। আর দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৩০০ হীরা সম্বলিত ওই সুক্ষ্মকাজের প্লাটিনাম নেকলেসটি বেছে নেন। ওই নেকলেসটি বিমূর্ত ফুলের নকশায় জ্যামিতি চিত্রয় চিত্রিত। শুধু হীরার নেকলেসই নয়, নিজাম আসাফ জাহ রানিকে হায়দ্রাবাদের বিখ্যাত ‘টায়রা’ও উপহার দেন। সেই টায়রাটিতেও ছিল হীরা ও প্লাটিনামের সমাহার আর ইংরেজি গোলাপের আদলে নকশার। সাত দশকের শাসনামলের বিভিন্ন সময়ে রানিকে ওই নেকলেস পরতে দেখা গেছে। এমনকি একবার ওই হারটি পরতে দিয়েছিলেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া রাজা তৃতী চার্লস ও প্রয়াত ডায়ানার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়ামের স্ত্রী দ্য ডাচেস অব কেম্ব্রিজ কেট মিডলটনকেও। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থাকার পর বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রয়াত হন। এরপর প্রথা মেনে প্রিন্স চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জকে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন