শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মার্কিনিদের পারিবারিক সম্পদে রেকর্ড পতন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় মূল্যস্ফীতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজার। নিম্নমুখী হয়েছে শেয়ারদর। এ অবস্থায় কমে গিয়েছে মার্কিন নাগরিকদের পারিবারিক সম্পদ। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের সম্পদে রেকর্ড পতন হয়েছে। এক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট খাতের সম্পদের মূল্যমান হ্রাসও ভূমিকা রেখেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের পারিবারিক সম্পদ ৬ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার কমেছে। এ পতনের পরিমাণ মহামারী শুরুর পর বিপর্যস্ত পরিস্থিতির চেয়েও বেশি। ফেডারেল রিজার্ভ জানিয়েছে, জুনের শেষে মোট পারিবারিক সম্পদ ১৪৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলারে নেমেছে। মার্চের শেষে এ সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৪৯ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলার। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় প্রান্তিকের মতো দেশটির পারিবারিক সম্পদে পতন হলো। দ্বিতীয় প্রান্তিকে পারিবারিক সম্পদের নিট পতন দুই বছর আগের রেকর্ড পতনের চেয়েও প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার বেশি ছিল। সে সময় কভিডজনিত মহামারীর কারণে অর্থনীতিজুড়ে স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল। সংকুচিত হয়ে পড়েছিল আয়ের পথ। বিশেষ করে নিম্নআয়ের পরিবারগুলো চরম অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। তবে শতাংশীয় পয়েন্টের হিসাবে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পারিবারিক সম্পদ সবচেয়ে বেশি কমেছিল। সে সময় এ সম্পদে ৫ দশমিক ২ শতাংশ পতন হয়েছিল। যেখানে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সম্পদ কমার হার ৪ দশমিক ১ শতাংশ। সর্বশেষ পতনের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। বছরের প্রথমার্ধে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। জানুয়ারি-জুন সময়ে ইকুইটি মূল্য ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার কমেছে। এটি রিয়েল এস্টেট খাতের পতন ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফেড ডাটা অনুসারে, এপ্রিল-জুন সময়ে আর্থিক খাতের বাইরের ঋণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। যদিও বছরের প্রথম তিন মাসে এ ঋণ বাড়ার হার ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া পারিবারিক ঋণের বৃদ্ধিও কিছুটা মন্থর হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে বছরওয়ারি পারিবারিক ঋণ বাড়ার হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নেমেছে। প্রথম প্রান্তিকে ঋণ বাড়ার এ হার ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে যখন পারিবারিক আয় ধাক্কা খাচ্ছে তখন ব্যয় নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি শিশু লালন-পালনের গড় খরচ ৩ লাখ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী একটি মধ্যম আয়ের দম্পতির একজন সন্তান বড় করতে অর্থাৎ ১৭ বছর হওয়া পর্যন্ত গড়ে ৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৫ ডলারের প্রয়োজন হবে। প্রতি বছর এ ব্যয়ের পরিমাণ ১৮ হাজার ২৭১ ডলার। এর আগে গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পারিবারিক সম্পদ বেড়ে ১৪১ লাখ ৭০ হাজার ডলারে উন্নীত হয়েছিল। ক্রমবর্ধমান ইকুইটি বাজার এ বৃদ্ধিতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। সে সময়ে পারিবারিক সম্পদে যুক্ত হয়েছিল আরো ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন অর্থনীতি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে। এতে টানা দুই প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। যদিও এটিকে মন্দা বলতে চাইছেন না অর্থনীতিবিদরা। কারণ অর্থনীতির অন্যান্য সূচক এখনো শক্তিশালী পর্যায়ে রয়েছে। রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন