মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে রাজস্ব এবং অস্ত্র পৌঁছানো বন্ধ করতে বিশ্বের দেশগুলোকে আরও বেশি কিছু করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। দেশটির জনগণের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনার কারণেই এমন আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর রয়টার্সের। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারপর থেকেই দেশটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। সেনাবাহিনী হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে। এরই মধ্যে দেশজুড়ে অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় চাপের মুখে অর্থনীতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে সামরিক সরকার। এদিকে জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে যে, জান্তা সরকার নির্বিচারে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। তবে দেশের ক্ষতি করতে চাচ্ছে এমন ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে সামরিক বাহিনী। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে আরও বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তারা অর্থবহ ও টেকসই উপায়ে দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে অথবা গভীর আর্থিক খাতের সংকট সমাধানেও তারা ব্যর্থ। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক যেন বিদেশি মুদ্রা আয় করতে না পারে তার জন্য লক্ষ্য স্থির করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ও তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বানও জানানো হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন জানাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে আর্থিকভাবে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করা। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। এমনকি অনেক দেশই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে চীন শত্রুতা শেষ করার আহ্বান জানালেও রাশিয়া দেশটির জেনারেলদের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক মিত্র হয়েই কাজ করছে এবং অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধানকে তিনটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বরণ করেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারকে যুদ্ধবিমান ও সাঁজোয়া যান দিয়েছে রাশিয়া। আর চীন যুদ্ধ ও পরিবহন বিমান সরবরাহ করেছে এবং সার্বিয়া রকেট ও গোলাগুলি দিয়েছে। এছাড়া ভারত একটি দূরবর্তী বিমান প্রতিরক্ষা স্টেশন তৈরিতে সহায়তা করেছে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন