হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের ৮০টি শহরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে দেশটির আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ পর্যন্ত ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, বিক্ষোভ দমনে সীমিত করে দেওয়া হয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, সন্ধ্যা নামার পরই তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। সরকারবিরোধী স্লােগান দেওয়ার পাশাপাশি কুশপুতুল এবং হিজাব পুড়িয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে তাদের। খবরে বলা হয়, ইরানে নৈতিক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভের শুক্রবার টানা অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। অসলোভিত্তিক সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানায়, সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আট দিনে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে; যা সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা ১৭ জনের তিনগুণ। এর মধ্যে পাঁচজন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে। আইএইচআর বলছে, পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুতে শুরু হওয়া এই সহিংসতা ইতোমধ্যে ৮০টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। তেহরানের নীতি পুলিশ হাতে আটক হওয়ার পর ২২ বছর বয়সী ওই কুর্দি তরুণী তিনদিন কোমায় ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যাচাইকৃত ফুটেজে দেখা গেছে, সরকার-সমর্থিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানী তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়। কেউ কেউ সশস্ত্র দাঙ্গা পুলিশের মুখোমুখি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের জমায়েতকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বহির্বিশ্বে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ বন্ধ করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইরান। নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমিনীকে। তিনদিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, পুলিশি হেফাজতে আমিনী মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। আমিনীকে মৃত ঘোষণা করার পর প্রতিবাদে তার জন্মস্থান কুর্দিস্তান প্রদেশের পাশাপাশি ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ এবং তাবরিজসহ প্রধান শহরগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আরব নিউজ, এএফপি, এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন