শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

শ্রীলঙ্কায় রাশিয়ান তেলে স্থিতিশীলতা

ফাইনান্সিয়াল টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শ্রীলঙ্কা তার তেল আমদানির উৎসের পরিবর্তন ঘটিয়ে রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে অপিরশোধিত জ¦ালনী তেল আমদানি শুরু করেছে, যা দেখায় যে, কীভাবে অর্থ সঙ্কটে পড়া দেশগুলি মস্কোর উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দ্বারা সৃষ্ট মূল্য ছাড়ের সুবিধা গ্রহণ করছে। তথ্য প্রদানকারী সংস্থা রেফিনিটিভ এবং অয়েলএক্সের তথ্য অনুসারে, শ্রীলঙ্কা, আর্থিক সঙ্কটের কারণে এই বছর যার জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল, মে মাস থেকে রাশিয়া থেকে অর্ধেকেরও বেশি অপরিশোধিত তেল সংগ্রহ করেছে। গবেষণা সংস্থা কেপলারের তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালের পর শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো রাশিয়ান তেল আমদানি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন যে, রাশিয়ান তেলের মূল্য ছাড়ের সুবিধা গ্রহণ করা শ্রীলঙ্কা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং ঊর্ধ্বগতির মার্কিন ডলারের মুখে আমদানি আর্থিক চাপে থাকা দেশগুলোর ব্যয় কমানোর প্রবণতাকে প্রতিফলিত করছে।

ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য জি৭ দেশগুলি ঘোষণা দেয় যে তারা রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করে দেবে। এরপর, ভারত ও চীন রাশিয়ার তেলের ক্রেতা হয়ে উঠেছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং কিউবা সহ মুদ্রাস্ফীতি-বিধ্বস্ত দেশগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে রাশিয়ান তেল আমদানিতে যোগ দিয়েছে। এই সমস্ত ক্রেতা এবং শ্রীলঙ্কা মার্চ মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাব থেকে বিরত ছিল, যা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নিন্দা করেছিল। অয়েলএক্স-এর সিনিয়র বিশ্লেষক নিল ক্রসবি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা আগামী কয়েক মাসে দরিদ্র দেশগুলো যা করবে বলে আমরা ধারণা করতে পারি, তার একটি বাস্তব উদাহরণ। তারা তাদের আমদানি ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে, তারা আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে এবং সেই প্রেক্ষাপটে রাশিয়ান ব্যারেলগুলি খুব লোভনীয় দেখাচ্ছে।’

তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা আরগাস মিডিয়া অনুসারে, ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ¦ালানী তেল বেঞ্চমার্ক মূল্যে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৩০ মার্কিন ডলার গড় ছাড়ে বিক্রি হয়েছে। গত বছর শ্রীলঙ্কা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৭.১ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছিল, কিন্তু এবছরের অয়েলএক্স-এর তথ্য বলছে যে, মে থেকে শ্রীলঙ্কার অপরিশোধিত আমদানির ৬০ শতাংশ রাশিয়া থেকে এসেছে। তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান কুয়ান্টকিউব-এর প্রধান নির্বাহী থান-লং হুয়েন বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কার কাছে বিক্রির বিষয়টি দেখায় যে, ইইউ আমদানি সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করার কারণে কীভাবে আগে ইউরোপের জন্য নিবেদিত রাশিয়ান তেল নতুন বাজার খুঁজে পেয়েছে’।
শ্রীলঙ্কা, যা মে মাসেও ঋণ খেলাপি ছিল, গুরুতর অভাবের সাথে লড়াই করছে। এই বছর দেশটির জ¦ালানী সরবরাহ এতটাই কম ছিল যে, বিদ্যুত বিভ্রাটগুলি ১০ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতো এবং গাড়ি চালকদের পেট্রোলের জন্য পুরো দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। বর্তমানে এই ঘাটতি কমার পাশাপাশি, রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স থেকে দেশটির আয় সাশ্রয়ী মূল্যের রাশিয়ান জ্বালানিসহ আমদানিতে তহবিল যোগাতে সাহায্য করছে। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র অপরিশোধিত তেল শোধনাগার এই মাসে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে, রাশিয়ান তেলের চালান আসার পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি আবার চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর্গাসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ফাইফ বলেন, ‘যদি অপরিশোধিত তেলের প্রস্তাব করা হয় প্রতি ব্যারেল ২৫ থেকে ৩০ মার্কিন ডলারের (ব্রেন্ট বেঞ্চমার্ক) নীচে, কেন উদীয়মান অর্থনীতিগুলি রাশিয়ান তেল কিনবে না’?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Yusuf samin ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ৭:০৩ এএম says : 0
এই স্থিতিশীলতা বাংলাদেশেও সম্ভব রাশিয়ার তেল দিয়ে,,, সরকারের উচিত আসন্ন মন্দা দেখার আগেই তেলের মজুত বাড়ানো,,, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার দিকে না তাকিয়ে নিজ দেশের স্বার্থ ও সুরক্ষার দিকে তাকিয়ে এখনি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত,,, হাতে সময় ও খুবই কম,,,
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন