আগাম নির্বাচনের দাবিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত লংমার্চ শুরু করেছে দেশটির বর্তমান বিরোধী নেতা ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। -ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর লাহোরের লিবার্টি চক এলাকা থেকে শুরু হয়েছে এই লংমার্চ—শেষ হবে আগামী ৪ নভেম্বর, ইসলামাবদের রাওয়াত এলাকায়। পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে এই লংমার্চের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হকিকি আজাদি মার্চ’ (স্বাধীনতার দাবিতে পদযাত্রা)। গত ২৫ অক্টোবর ৭ দিনের এই লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পিটিআইয়ের লংমার্চের সূচি অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুরের পর লাহোরের লিবার্টি চক থেকে পদযাত্রা শুরু করবেন পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। তারপর যাত্রাপথের বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ ও মিছিল করতে করতে আগামী ৭ দিন পর, ৪ নভেম্বর ইসলামাবাদের রাওয়াত এলাকায় পৌঁছাবেন তারা। সেখানে এক বড় সমাবেশের পর শেষ হবে এই লংমার্চ। পিটিআইয়ের পাঞ্জাব রাজ্য শাখা এই লংমার্চ শুরু করলেও পদযাত্রার বিভিন্ন পর্যায়ে গিলিগিট-বাল্টিস্তান, আজাদ জম্মু ও কাশ্মির এবং খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশ থেকেও পিটিআই নেতাকর্মীরা এতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা আসাদ ওমর।
পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান ও দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অধিকাংশ জেষ্ঠ্য নেতারা সারক্ষণ এই লংমার্চের সঙ্গে থাকবেন বলে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে একাধিক দলীয় সূত্র। সেই সঙ্গে আরও জানা গেছে, দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যেন কোনো কোনো প্রকার সহিংসতা ও সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে না জড়াতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে পিটিআইয়ের হাইকমান্ড। মঙ্গলবার লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণার সময় দলের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে ইমরান খান বলেছিলেন, আমরা সবাই শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে লাহোরের লিবার্টি চকে জড়ো হব। সেখানে জুমার নামাজ আদায় শেষ শুরু হবে আমাদের লংমার্চ।
ইমরান খান বলেন, আমরা অবশ্যই (এই কর্মসূচি চলাকালে) শান্তিপূর্ণ থাকব। যদি কোনো প্রকার ঝামেলা ঘটে, সেক্ষেত্রে যেন আমাদের ওপর কোনো দায় না পড়ে। অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটানোই আমাদের এই লংমার্চের উদ্দেশ্য। ইসলামাবাদে অনর্থ ঘটানো নয়। এদিকে, লংমার্চ ও রাজধানীতে সমাবেশের জন্য বেশ আগে পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল পিটিআই, কিন্তু সরকার অনুমতি না দেওয়ায় সুপ্রিক কোর্টে এ বিষয়ক রিট করা হয়েছিল দলটির পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট লংমার্চ ইসলামাবাদের রাওয়াত এলাকায় পিটিআইকে সমাবেশ করার অনুমতি দেন, এবং পাশাপাশি শর্ত দেন— রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালে রাজধানী বা অন্য কোনো এলাকায় সহিংস কোনো কর্মকাণ্ড এবং সরকারি কোনো সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না। শুক্রবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের নির্দেশিত জায়গায় তারা (পিটিআই) সমাবেশ করতে পারবেন। কিন্তু রাজধানী বা অন্য কোথাও যদি কোনো প্রকার সহিংসতা বা নাশকতা ঘটে, সেক্ষেত্রে সরকার খুবই কঠোর হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন