মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে এক ঐতিহাসিক সমুদ্রসীমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা এবং মধ্যস্ততাতেই এই বিরোধের সমাপ্তি হলো। এর ফলে, উভয় দেশই এখন সমুদ্রের তলদেশের বিরোধপূর্ণ গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস আহরণ করতে পারবে। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ এবং লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, গ্যাস ক্ষেত্র নিয়ে বিরোধের কারণে দু'দেশের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। লেবাননের ইরানপন্থী সংগঠন হেজবুল্লাহ একাধিকবার ইসরাইলে হামলার হুমকিও দিয়েছে। তবে ইসরাইল বৈরুতের সম্মতি ছাড়া গ্যাস ক্ষেত্রে খনন শুরু করেনি। এখন চুক্তির পর শান্তিপূর্ণ উপায়েই দুই দেশ গ্যাস তুলতে পারবে। যদিও এই দুই দেশের মধ্যে কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। প্রায়ই দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও ঘটে।
তাদের মধ্যে এই চুক্তির জন্য মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই চুক্তিকে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি বলে বর্ণনা করেছেন।
বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো যখন গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে, তার মধ্যে দুই বৈরী প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এই সমঝোতা হলো। লেবাননে এখন তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। বিশ্বব্যাংকের ভাষায় এটি আধুনিককালের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সঙ্কট। লেবানন আশা করছে, সাগরতলের গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস আহরণ করতে পারলে তাদের দুর্দশা কিছুটা লাঘব হবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, লেবাননের পক্ষে দ্রুত গ্যাস আহরণে যাওয়া সম্ভব হবে না, এতে সময় লাগবে। অন্যদিকে ইসরাইলে নভেম্বরের এক তারিখে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদের জন্য এরকম একটি সাফল্য দরকার ছিল। চুক্তি সই হওয়ার কিছু আগে লাপিদ দাবি করেন, লেবাননের এই চুক্তির তার মানে তারা ইসরায়েলকে কার্যত স্বীকৃতি দিচ্ছে। কিন্তু লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ একটি কারিগরি কাজ মাত্র, এর কোন রাজনৈতিক অর্থ নেই। সূত্র : বিবিসি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন