হিজাব না পরেই ব্যাংকে এসেছিলেন এক মহিলা। ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে কাজ সেরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মহিলার পরনে হিজাব ছিল কিনা, তা নিয়ে অবশ্য মাথা ঘামাননি ওই ব্যাংকের ম্যানেজার। সেটাই হল কাল। হিজাব ছাড়া মহিলাকে পরিষেবা দেয়ার অপরাধে চাকরি খোয়াতে হল ওই ব্যক্তিকে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই ফের সরকারি দমনপীড়নের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। প্রায় দু’মাস ধরে ঘরে-বাইরে হিজাব নিয়ে তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েছে ইরানের প্রশাসন। তাতেও নিজেদের অবস্থান থেকে একটুও নড়েননি ইব্রাহিম রাইসিরা।
বছর বাইশের মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তাল ইরান। নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয় তাকে। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি ওই তরুণীকে মারধর করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আক্রান্ত হন হৃদরোগে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। রাজপথে নেমে আসে কাতারে কাতারে মানুষ। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করা শুরু হয়।
এমন পরিস্থিতিতেই প্রকাশ্যে এসেছে ইরানের ব্যাংকের ঘটনাটি। দেশের রাজধানী তেহরানের অদূরে কোম প্রদেশের এই ব্যাংকে বৃহস্পতিবার এসেছিলেন ওই মহিলা। হিজাব না পরেই ব্যাংকে এসেছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বেরিয়েও যান ওই মহিলা। গোটা ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে, এরপরেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজারকে। ইরানের অধিকাংশ ব্যাংকই সরকারের অধীনে থাকে। সেখানে মহিলারা হিজাব পরে আসছেন কিনা, তা দেখার দায়িত্ব থাকে ম্যানেজারের উপরেই। সব মিলিয়ে, কাজে ‘গাফিলতি’র কারণেই চাকরি খোয়াতে হয়েছে ওই ম্যানেজারকে।
উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারকি করে থাকে। কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ক্ষমতায় আসার পরেই হিজাব পরার বিষয়টি চাপিয়ে দেয়া হয় মেয়েদের উপরে। তার প্রতিবাদ করতে গিয়েই মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। সেখান থেকেই হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সামিল হন ইরানের বহু মানুষ। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন