শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্ববাসীকে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান খামেনির ভাগ্নির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ১০:১৪ এএম

ইরানের ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী শাসকগোষ্ঠীকে চাপে রাখতে বিশ্ববাসীকে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ভাগ্নি ফরিদেহ মোরাদখানি।

কন্টেন্ট শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে শেয়ার করা সেই ভিডিওতে ফরিদেহ মোরাদখানি বলেন, ‘হে মুক্ত পৃথিবীর মানুষজন, আমাদের পক্ষে থাকুন এবং আপনাদের দেশের সরকারকে বলুন এই খুনী ও শিশুহত্যাকারী শাসকদের যেন তারা সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে। ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতার প্রতি তাদের কোনো আনুগত্য নেই এবং ক্ষমতা ধরে রাখা ও বলপ্রয়োগ ব্যতীত তারা আর কিছুই জানে না।’
ফরিদেহ মোরাদখানির বাবা আলি মোরাদখানি আরাঙ্গেহ ছিলেন একজন শিয়াপন্থী মুসলিম নেতা। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির বোনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেই সূত্রে আলি মোরাদখানি আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনির ভগ্নিপতি।
তবে ইরানে ক্ষমতাসীন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও আদর্শগত বিরোধ ছিল তার। এ কারণে দেশের ভেতরেই একরকম নির্বাসিত জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে তেহরানে মৃত্যু হয় আলি মোরাদখানি।
ফরিদেহ মোরাদখানি পেশায় একজন প্রকৌশলী। তবে তিনি একজন সক্রিয় মানবাধিকারকর্মীও। ইউটিউবে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন তার ভাই মাহমুদ মোরাদখানি। মাহমুদ মোরাদখানি ফ্রান্সে থাকেন। ভাই-বোন উভয়ই ইরানের ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধী।
ইরানের মানবাধিকারকর্মীদের সংবাদসংস্থা হারানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানে চলমান বিক্ষোভে উসকানি ও সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে তিনি তেহরানের এভিন কারাগারে রয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, জেলে যাওয়ার আগেই এ ভিডিওটি শ্যুট করেছিলেন তিনি।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০২২ সালের শুরুর দিকেও একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ফরিদেহকে। তবে কয়েক দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।
জামিনের শর্ত অনুযায়ী, গত ২৩ তারিখ আদালতে হাজিরা দিতে যাচ্ছিলেন ফরিদেহ। সেখানে পৌঁছানোর পথেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন মাহমুদ মোরাদখানি।
ফরিদেহর ভিডিও সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির দপ্তরে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু তার দপ্তরের কোনো মুখপাত্র এ সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত সেপ্টেম্বরে হিজাব ঠিকমতো না পরা ও বোরকা পরিধান না করায় ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হন ২২ বছরের তরুণী মাশা আমিনি। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
মাশা আমিনির মৃত্যুর পরদিন থেকে এক অভূতপূর্ব বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। প্রথম পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মাশাকে গ্রেপ্তারকারী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানালেও খুব দ্রুত সেই বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।
ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীও অবশ্য শুরু থেকেই অত্যন্ত কঠোরভাবে এই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে, কিন্তু এখনও সফল হতে পারেনি। হারানা নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, গত দু’মাসে বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইরানে খুন হয়েছেন সাড়ে ৪শ’রও বেশি মানুষ। সূত্র : রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন