চীনের কঠোর কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় নানজিং টেক ইউনিভার্সিটিতে মাত্র একজনের কোভিড শনাক্ত হওয়ায় সেখানে
লকডাউন ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার ওই ঘটনার ছবি ও ভিডিও টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের বলতে শোনা যায়, ‘আমরা বাড়ি ফিরতে চাই’, ‘নেতারা পদত্যাগ করুন’, ‘তোমার ক্ষমতা ছাত্রদের দেওয়া’। ভিডিওতে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়।
গার্ডিয়ান লিখেছে, এ ব্যাপারে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সাড়া পায়নি। তবে এএফপি ও রয়টার্স সেই টুইটার পোস্টের ভৌগলিক অবস্থান শনাক্ত করেছে।
এক শিক্ষার্থী এএফপিকে বলেন, নানজিং টেক ইউনিভার্সিটিতে একজনের কোভিড শনাক্ত হওয়ার পরদিনই কর্তৃপক্ষ পাঁচদিন ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেয়। তার সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তেমন যোগাযোগ না করায় বেশ অসন্তুষ্ট। শীতের ছুটিতে তারা বাড়ি যেতে পারবে কিনা সেটি নিয়েও চিন্তিত তারা।
চীনের শূন্য কোভিড নীতির কঠোর বিধিনিষেধের প্রতিবাদে চলা দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে। চীনের জনগণ
লকডাউন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে বিক্ষোভ থেকে। এমনকি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবিতেও সোচ্চার হয়েছেন তারা।
বিক্ষোভ দমাতে ধর-পাকড় অভিযান, নির্যাতন ও অনলাইনে নজরদারি চালিয়েছে শি জিনপিং সরকার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্সরশিপ আরোপ করেছে তারা।
গত সোমবার চীনে ৫ হাজার ২৩৫ জনের কোভিড শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। বেশ কিছুদিন ধরেই কোভিড সংক্রমণ রোধে সরকারের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর শিনজিয়াংয়ে কঠোর
লকডাউনে ঘরে বন্দি থাকার অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যুতে বিক্ষোভ জোরালো হয়।
আন্দোলনকারীরা চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরে যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এর আগে সেই বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে হংকংয়ে। সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে সাদা কাগজ তুলে ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয় মানুষ।
২০১৯ সালের গণবিক্ষোভে হংকংয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়ন চালায়। তাদের স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। ওই সাঁড়াশি অভিযান আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে খালি কাগজ তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
মন্তব্য করুন