গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়েই দাম বেড়েছে জ্বালানির। দেশগুলোর বাসিন্দাদের জ্বালানির পেছনে খরচ গত বছরের তুলনায় কয়েক গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। আর ইইউভুক্ত দেশগুলোকে সব মিলিয়ে খরচ করতে হয়েছে ৯৪০ বিলিয়ন ইউরো বা প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার! রোববার ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় বেশি দামে অন্য উৎস থেকে জ্বালানি আমদানি করতে হচ্ছে ব্লকটিকে। আর এতেই শত শত বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে ইউরোপকে। আর এখনও আসল সংকট সামনেই পড়ে আছে। কারণ, জ্বালানির এই উচ্চমূল্য আরও কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে সেই ধারণা আগে থেকেই ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের। সেই প্রস্তুতিও তারা নিয়ে রেখেছিল। কিন্তু তাতেও সংকট এড়ানো যায়নি। আগামী শীতকাল পর্যন্ত জ্বালানি একটা বড় ইস্যু হয়েই থাকছে ইউরোপের কাছে। যে গ্যাস তারা রিজার্ভ করেছিল তা দিয়ে বড়জোর এই শীত পার করা সম্ভব হবে। ফলে পরবর্তী শীতের জন্য তাদের নতুন করে গ্যাসের রিজার্ভ করতে হবে। আর এবার রাশিয়া থেকে গ্যাস পাওয়ার সুযোগ নেই। ২০২৬ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও গ্যাস প্রবেশ করতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে প্রতি বছরই জ্বালানির সংকট অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে জ্বালানির দামও বেশি থাকবে। জ্বালানি নিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে ইউরোপকে। ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ব্রুগেল ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, আগামী কয়েক বছর ইউরোপে কঠিন পরিস্থিতি টিকে থাকতে পারে। পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান এস-আরএম’র ডিরেক্টর মার্টিন ডেভেনি বলেন, বেলআউট ও ভর্তুকির মতো সকল ব্যবস্থা একবার গ্রহণ করা হয়ে গেলে আর কিছু করার থাকবে না। এটাই ব্যাপক পরিমাণ অর্থের বিষয়। ফলে আগামী বছর এই সংকট মোকাবেলা সরকারগুলোর জন্য আরও কঠিন হবে। রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞার কারণে জ্বালানির দাম সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙেছে। তারপরেও এ বছর গোটা গ্রীষ্মকালজুড়ে জ্বালানি রিজার্ভ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে দাম বেশি হলেও জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। যদিও এই শীতকাল ইউরোপের জন্য বড় পরীক্ষা হিসেবে আবির্ভুত হতে যাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। গত মাসে জার্মানির এনার্জি রেগুলেটর ‘ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সি’ সাবধান করেছে যে, জার্মান পরিবার ওক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো তাদের প্রথম গ্যাস-সঞ্চয় পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। সামনের মাসগুলোতে গ্যাস সংকট এড়াতে গ্যাসের ব্যবহার কমপক্ষে ২০ শতাংশ হ্রাস করা জরুরি। ব্লুমবার্গ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন