প্রাকৃতিক বিপর্যয়, খাদ্যসংকটের মতো সমস্যায় জেরবার পাকিস্তান। তার সঙ্গে জুড়েছে বিদেশি ঋণের বোঝা। সব মিলিয়ে দেশ চালাতে নাজেহাল হয়ে পড়ছে পাকিস্তানের প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে নিজের দেশকে ভিক্ষুকের সঙ্গে তুলনা করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দেশের আমলাদের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেছেন, পরমাণু শক্তিধর একটি দেশ হয়েও অন্যদের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। দেশের পক্ষে এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়।
চীন-সহ একাধিক দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ) থেকেও ঋণ নিয়েছে ইসলামাবাদ। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় বন্যার পরে। ভয়াবহ বন্যায় ডুবে যায় দেশের এক তৃতীয়াংশ। তার জেরেই প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডার। বন্যার পর পাক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ৯০০ কোটি ডলার দিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রতি দেয় একাধিক দেশ।
আর্থিক সাহায্যের প্রত্যাশা নিয়েই কয়েকদিন আগেই সউদী আরব সফরে গিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি নিয়েই দুই তরফের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। তারপরেই গত মঙ্গলবার সউদী প্রশাসন বিপুল আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করে। সেদেশের বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ বাড়াতে উৎসাহী সউদী আরব। ২০০ কোটি ডলারের অঙ্ক বাড়িয়ে ৫০০ কোটি করা যায় কিনা, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হবে।” সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, “পাকিস্তানের অর্থনীতির উন্নতির স্বার্থে এক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে সউদী আরব।”
বিপুল মুদ্রাস্ফীতির জেরে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের পক্ষে। বিদেশি অনুদান আর ঋণের উপর ভরসা করেই দাঁড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। এমন পরিস্থিতিতে শাহবাজের মত, ‘অন্য দেশ থেকে ঋণ নেয়া সত্যিই লজ্জাজনক। এইভাবে ঋণ নিতে থাকলে সমস্যা সমাধান হবে না। পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হয়েও নিজেদের অর্থনীতিকে বাঁচাতে অন্য দেশের কাছে ঋণ নেয়া, এটা একেবারেই মেনে নেয়া যায় না।’ সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন