রাজস্থান থেকে অপহৃত দুই মুসলিম যুবকের পোড়া কঙ্কাল পাওয়া গেছে হরিয়ানায়। একটা ঝলসে যাওয়া গাড়ির ভেতরে ছিল দুই যুবকের কঙ্কাল। ঘটনা সামনে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায়। খবর রটে গরু পাচারকারী সন্দেহে ওই দুই যুবককে খুন করা হয়েছে। দু’জনকে জ্যান্ত পোড়ানো হয়েছে নাকি খুনের পরে পোড়ানো হয়েছে, এ নিয়ে পানিঘোলা শুরু হয়। উঠে আসে কট্টরবাদী সংগঠনের নাম। আটকও করা হয় একজনকে।
হরিয়ানার সেই পোড়া কঙ্কাল-কাণ্ডের রহস্য খুলছে এক এক করে। ঘটনায় পুলিশ ও বাজরং দলের নাম জড়িয়েছে। মৃতদের পরিবার অভিযোগ করেছে, বাজরং দলের চারজন নাসির (২৫) এবং জুনেইদ (৩৫) ওরফে জুনাকে গরু পাচারকারী সন্দেহে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরিবারের দাবি, তারা সকালে কাজের জন্য বেরিয়েছিল। গাড়ি নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার কথাও ছিল। মাঝপথেই তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আধমরা অবস্থায় তাদের গাড়িতে রেখে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
রাজস্থান পুলিশের দাবি, ওই দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। চারজন তাদের থানায় নিয়ে এসে গরু পাচারের অভিযোগ দায়ের করতে চেয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, নাসির ও জুনেইদ গরু পাচারে জড়িত। তাদের যেন গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ওই দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসার আগে এমন মারধর করা হয়েছিল যে, তারা মৃতপ্রায় ছিল। আধমরা দু’জনকে গ্রেফতার করতে চায়নি পুলিশ। ফলে তাদের আবার ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিঙ্কু সাইনি নামে বাজরং দলেরই এক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। রিঙ্কু পেশায় ট্যাক্সি ড্রাইভার। জেরায় সে দাবি করেছে, নাসির ও জুনেইদকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না চাইলে তাদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাদের। এরপর দলের লোকজন ভয় পেয়ে গিয়ে লাশ দুটো গাড়িতে রেখে সেই গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। নাসির ও জুনেইদের পরিচয় যাতে সামনে না আসে সেই কারণেই তাদের লাশ দুটো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
তবে রিঙ্কু কতটা সত্যি বলছে সে নিয়ে সন্দেহ আছে পুলিশের। ভারতপুরের আইজি গৌরব শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এফআইআরে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের খোঁজ শুরু হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে আলাদা টিম তৈরি করেছে পুলিশ। কঙ্কাল দুটি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। সূত্র : দ্য ওয়াল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন