চন্দ্রযান-২ এর লক্ষ্য শেষপর্যন্ত সফল হয়নি। চাঁদের মাটি সম্পর্কে তথ্য নিতে গিয়ে গতিবেগের গোলমালে ভারতের চন্দ্রযানটি আছড়ে পড়েছিল সেখানে। তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ডাহা ফেল মিশন। তবে ব্যর্থতাই তো নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ জোগায়। সেভাবেই ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো ফের চন্দ্রাভিযানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। তৈরি হয়েছে চন্দ্রযান-৩। প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশও করেছে যানটি। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরই চাঁদে পাড়ি দেবে ভারতের নতুন চন্দ্রযান।
ইসরো সূত্রে খবর, জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম কয়েকদিনের মধ্যে চন্দ্রযান-৩’এর EMI ও EMC পরীক্ষা হয়েছে। প্রথমটি ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইন্টারফেয়ারেন্স ও দ্বিতীয়টি ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক কমপ্যাটিবিলিটি। দুই পরীক্ষাই মহাশূন্যে যন্ত্রপাতি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য করা হয়। আর সুখবর এই যে, দুই পরীক্ষাতেই পাশ করেছে চন্দ্রযান-৩। অর্থাৎ মহাকাশের পরিবেশে নিজের যন্ত্রপাতিকে সচল রেখে কাজ করতে সক্ষম ইসরোর তৈরি নতুন যানটি।
তিনটি ভাগ রয়েছে চন্দ্রযানের। প্রোপালশন, ল্যান্ডার ও রোভার। বলা হচ্ছে, রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে প্রতিটি অংশ যুক্ত থাকবে এবং কাজ করবে। আর সেই কারণে চন্দ্রযান-৩’এর কার্যপদ্ধতি খানিকটা জটিল। প্রথমত তাকে পৃথিবীর তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের (EM Field)বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মহাকাশে বৃহত্তর তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের সঙ্গে মানিয়ে কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে হবে। তারপর আবার চাঁদের (Moon) তড়িৎচুম্বকীয় ফিল্ড থেকে তথ্য পাঠানোর জন্য সক্রিয় থাকতে হবে। এখন EMI ও EMC পরীক্ষায় এসব কাজে কতটা সক্ষম চন্দ্রযান-৩, সেটাই বুঝে নিলেন বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রযান-২’তে যে ভুল হয়েছিল, সেই ভুল আর যাতে না হয় সেদিকে এবার বাড়তি নজর ইসরোর। সমস্ত হিসেবনিকেশ একেবারে নিখুঁত করা হবে চন্দ্রযান-৩’এর। এর আগে চন্দ্রযানের ‘বিক্রম’ ল্যান্ডারটি ভেঙে পড়েছিল, তার স্রেফ হিসেবের ভুলে। কিন্তু নতুন যানটি আরও উন্নত। চন্দ্রপৃষ্ঠে ল্যান্ডারের নিরাপদ অবতরণের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের জুনের পর উৎক্ষেপণ করা হবে বলে ইসরো সূত্রে খবর। সূত্র: টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন