মানব সভ্যতা কোভিডের মতো ভয়ংকর মহামারী খুব বেশি দেখেনি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে করোনা। একটি পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী এখনও পর্যন্ত মারণ ভাইরাস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬৮ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ফলে কোভিড যে ভয়ংকর এক আতঙ্কের নাম তা নতুন করে বলার নয়। তথাফি গুরগাঁওয়ের বাসিন্দা এক মহিলা সংক্রমণের ভয়ে যে কাণ্ড করেছেন, তা নজিরবিহীন। ১০ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গত তিন বছর গৃহবন্দি তিনি। এমনকী স্বামীকে আলাদা ভাড়া বাড়িতে থাকতে বাধ্য করেছেন। সম্প্রতি ওই স্বামী পুলিশের সাহায্য চান। শেষ পর্যন্ত দরজা ভেঙে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গুরগাঁওয়ের মারুতি কুঞ্জের বাসিন্দা সুজন মাঝি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রীর নাম মুনমন মাঝি। তাদের দশ বছরের ছেলে রয়েছে। তিন বছর আগে করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় থেকেই ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ডোবেন মুনমুন, এই বুঝি কোভিড আক্রান্ত হয় সন্তান এবং খারাপ কিছু ঘটে যায়। এর পরেই সুজনকে আলাদা ভাড়া বাড়িতে থাকতে বাধ্য করেন। যেহেতু পেশার কারণে বাইরে যাতায়াত করেন স্বামী।
প্রাথমিক এই ভাবনায় ভুল ছিল না। কিন্তু দেশে কোভিড সংক্রমণ কমার পরেও স্বামীকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি মুনমুন। খাবার এবং অন্য প্রয়োজনের জিনিস বাড়ির দরজায় রেখে আসতেন সুজন, তড়িঘড়ি তা নিয়ে দরজা বন্ধ করতেন মুনমুন। সুজনের দাবি, গত তিন বছরে ধরে ছেলে ও বউ সূর্যের মুখ দেখেনি। কথাবার্তা চলত ভিডিওকলে। হাজার বুঝিয়েও কাজ হয়নি।
হতাশ সুজন সম্প্রতি পুলিশে যোগাযোগ করেন। প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করতে চায়নি পুলিশকর্মীরা। এরপর ভিডিও কলে ছেলের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের কথা বলার ব্যবস্থা করেন সুজন। শিশুটি বাড়ির বাইরে বেরোনোর জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। পরদিন সুজন-মুনমুনের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। মুনমুন যদিও দরজা খুলতে চায়নি। এরপর দরজা ভেঙে মা ও ছেলে মুক্ত করে পুলিশ। সূত্র: এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন