তুরস্কে আসন্ন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানবিরোধী ছয় দলীয় জোটে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আর এতে করে এরদোগান পুনঃনির্বাচিত হতে সুবিধা পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৪ মে ওই নির্বাচন হবে। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মধ্যেও নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এরদোগান। তুরস্কের ডানপন্থী আইওয়াইআই পার্টির নেতা মেরাল আকসেনার জানিয়েছেন, ছয় দলীয় জোট আর জাতীয় আকাক্সক্ষার প্রতিফলন করছে না। তিনি এর মাধ্যমে মে মাসের নির্বাচনে জোটটি থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আকসেনার বলেন, আইওয়াইআই পার্টি প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তাম্বুল বা আঙ্কারার মেয়রদের যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু অন্য পাঁচ দল তা গ্রহণ করেনি। তিনি ওই দুই মেয়রকে তাদের কর্তৃব্য পালনের আহ্বানও জানান। এর মাধ্যমে কার্যত তিনি উভয়কেই প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলেছেন। অন্যদিকে জোটের পাঁচটি দল তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা কেমেল কিলিচদারুগ্লুকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নের কথা ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার এরদোগানকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কিলিচদারুগ্লুর নাম ঘোষণা করে তারা। কিন্তু আকসেনার বলেন, কিলিচদারুগ্লুর পক্ষে এরদোগানকে হারানো কঠিন হবে। তিনি বলেন, এরদোগানের বিরুদ্ধে কিলিচদারুগ্লুর তেমন জনভিত্তি নেই। তিনি যখন জোটে যোগ দেন, তখন তার জনপ্রিয়তা ছিল ৯ ভাগ। বর্তমানে তা ১৭ ভাগের কাছাকাছি। তবে আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলের মেয়র উভয়েই কেমেলের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আকসেনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। শুক্রবার আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভাস ও ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরেম ইমামোগ্লু এক বিবৃতিতে রিপাবলিকান পার্টির প্রধান কেমেলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার প্রতি তাদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। এদিকে, গত মাসের শুরুর দিকে সাত দশমিক আট মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয় তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল। এতে দেশটির দুই লাখ ১৪ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব ভবন হয় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে, না হয় মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান এ তথ্য জানান। উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এরদোগান বলেন, যেসব ভবন সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে অথবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। প্রেসিডেন্ট বলেন, ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ মূল্যায়ন শেষ হওয়ার পরে নতুন ভবন নির্মাণ শুরু হবে। এসব নতুন ভবন চার তলার বেশি হবে না বলেও জানান তিনি। এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের প্রাচীন শহরগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাচ্ছি, যা আমাদের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে বাঁচিয়ে রাখবে। গত মাসের ৬ ফেব্রুয়ারি সাত দশমিক আট ও সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশটির মোট আটটি প্রদেশে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আল-জাজিরা, ডেইলি সাবাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন