ইনকিলাব ডেস্ক : ২০০৭ সালে অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন জেনারেল ওয়েসলে ক্লার্ক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বুশ প্রশাসন ৫ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে সাতটি দেশ মুছে ফেলার পরিকল্পনা করছে। দেশগুলো হলো ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইরান। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা টিকিয়ে রাখার অংশ হিসেবেই এ পরিকল্পনা করছে। তখন অবশ্য ওয়েসলে স্পষ্ট করে বলেননি কেন তিনি একথা বলছেন, বা যুক্তরাষ্ট্রই বা কেন এমন পরিকল্পনা করছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ২০১১ সালে থেকে আরব বসন্ত শুরু, পরবর্তীতে সেই আন্দোলন চলতে থাকা এবং জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর উত্থান সেই পরিকল্পনার ফল বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেই সেনা কর্মকর্তার কথা বিশ্লেষণ করেন বিশেষজ্ঞ কেন ওকিফে। ‘দ্য গ্রেটেস্ট ইসরাইল প্রজেক্ট এর ব্যাখা দিতে গিয়ে কেন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা মহাদেশে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতেই এ পরিকল্পনা করা হয়। একে বলকানাইজেশন বলা হয়। বলকানাইজেশন এমন একটি ভ‚-রাজনৈতিক টার্ম, যা দিয়ে বোঝায় কিভাবে একটি এলাকাকে টুকরো টুকরো করা যায়। অস্থিরতা তৈরি করে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এছাড়া দেশগুলোর মধ্যে শত্রæতা তৈরি করা। এমনই সম্পর্ক তৈরি করা যাতে একে অপরকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা না করে। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী সৃষ্টি করেছে। তাদের এ সৃষ্টিই পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থির করে রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে তাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। যারা ইসলামের কথা বলে চরম নৃশংসতা চালাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ এবং প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন ধ্বংস করে দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা ছাড়ারও আইএস দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করছে। তবে এখনো পর্যন্ত খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। কিন্তু চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইসলায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর এ কাজ করার জন্য পুরো এলাকা অস্থির করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ মধ্যপ্রাচ্য অস্থির করে রাখলে বা সব দেশেই সমস্যা বাধিয়ে রাখলে তারা একটি দেশের দিকে বিশেষ নজর দিতে পারবে না। সব দেশ নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে হলে তারা তো আজ স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা নিয়ে কথা বলার সময় পাবে না। তাই সুকৌশলে যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনা করেছিল। যেমন তারা করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে দেওয়ার জন্য। সোভিয়েতকে ভাঙতে তারা তালেবান ও আল-কায়েদার জন্ম দিয়েছিল। পরে আবার তাদের বিরুদ্ধেই অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : অলটারনেটিভ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন