ইনকিলাব ডেস্ক : গো-হত্যা বন্ধের নামে ভারত জুড়ে বারবার গণপিটুনির ঘটনা উঠে আসছে শিরোনামে। বিশেষ করে মুসলিম স¤প্রদায়ের মানুষই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে এর তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গো-রক্ষার নামে গণপিটুনি বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। কিন্তু তারপরও গণপিটুনির আতঙ্কে ভুগছে গোটা দেশ। তেমনই এক ছবি ধরা পড়ল আলিগড়ে। জনতার কাছে মার খাওয়ার আশঙ্কায় শেষে বোরকা শরণাপন্ন হলেন এক মুসলিম যুবক।
ঘটনাটি গত রবিবার দুপুরের। বোরকা পরে ৪২ বছরের এক ব্যক্তিকে স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়াতে দেখেন যাত্রীরা। তাঁরাই জিআরপি-কে খবর দেন। খানিকক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর ওই ব্যক্তিকে আটক করে জিআরপি। জেরায় ব্যক্তি জানান, তার নাম নাজমুল হাসান। তিনি আলিগড়ের কাশিমপুর পাওয়ার স্টেশনের অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। মুসলিম হওয়ার জন্য যে কোনও মুহূর্তে গণপিটুনির শিকার হতে পারেন তিনি। আর সেই আশঙ্কাতেই বোরকা পরে ঘোরাফেরা করছেন বলে জানান নাজমুল।
কিন্তু কোনও অপরাধ না করে থাকলে অকারণ কেন ভয় পাচ্ছেন তিনি? নাজমুল জানান, এক আত্মীয়কে দেখতে মাঝেমধ্যেই দিল্লি যেতে হয় তাকে। গত সপ্তাহে ফেরার পথে ট্রেন থেকে আলিগড় স্টেশনে নামার সময় অনিচ্ছাকৃভাবে এক ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেন। সেই ব্যক্তি নাজমুলকে যাত্রীদের সামনেই তাঁর ধর্মের নামে গালিগালাজ করতে থাকেন। এমনকি এই শহরে তাকে কোনওভাবেই আর টিকতে দেওয়া হবে না বলে তাঁকে প্রকাশ্যে হুমকিও দেওয়া হয়। অনেকে গোটা ঘটনাকে সমর্থন জানিয়ে সেই ব্যক্তির পাশে দাঁড়ান বলে দাবি নাজমুলের। আর তারপর থেকেই ভয়ে ভয়ে রয়েছেন তিনি।
পুলিশকে নাজমুল বলেন, “কিছুদিন আগেই বল্লভগড়ে জুনায়েদকে ট্রেনে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনার কথা শুনেছিলাম। নিজের থেকেও বেশি চিন্তা হচ্ছে স্ত্রীর জন্য। কিন্তু এমন হুমকির ভয়ে তো বাড়িতে বসে থাকা সম্ভব নয়। তাই বোরখা পরে যাতায়াত করব বলে ঠিক করি।” জেরার পর অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয় নাজমুলকে। কিন্তু তাঁর এই ভীতি দেখে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুলিশ কর্মকর্তাদের কপালেও।
সিনিয়র সুপারিনটেন্ড্যান্ট রাজেশ পালে বলেন, “নাজমুলকে আটক করা হলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। সঙ্গে ভয়ে কাঁপছিলেন। আর বারবার বলছিলেন, তিনি কোনও অপরাধ করেননি।”
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন