ইনকিলাব ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি ব্যস্ত শহর আবুধাবি ভারতের চেন্নাইর মতোই পানিতে সয়লাব হয়ে গেল। গত বছরের শেষের দিকে হঠাৎ ঝড় আর বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় চেন্নাই এবং অসহনীয় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ঠিক তেমনি গত বুধবার বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে গেল আবুধাবি। এদিন বেলা ১১টা বাজতে না বাজতেই অন্ধকার ঘনিয়ে এলো আবুধাবি শহরের আকাশে। তার পরই আধা ঘণ্টা ধরে চলল বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বৃষ্টি! গত কয়েক দশকে এমনটা দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না আবুধাবির বাসিন্দারা। আরব আমিরশাহীতে বৃষ্টির দেখা মেলে বছরে হাতেগোনা কয়েকটা দিন। তা-ও ছিটেফোঁটা। বড়জোর কয়েক মিনিট। সেটা আবার শীতকালে। গরমকালে এখানে বৃষ্টির প্রশ্নই ওঠে না। মার্চ মাসে ঠা-া কমে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তীব্র গরম। মে-জুন মাসেও তাপমাত্রা পঞ্চাশ ছোঁয়। এতেই অভ্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে এমনতর বৃষ্টি অবাক করে দিয়েছে মরু শহরের প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষকে। খবরে বলা হয়, শহরের বিমানবন্দরের কার্গো হোল্ড-এ ৬৪ টন ওজনের ১৭টি হাতি বিশ্রামহীন প্রতি মুহূর্ত কাটাচ্ছিল অপেক্ষায়। হাতিগুলো বিমানে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিল। এমন সময় শুরু হয় প্রচ- বাতাস এবং ভারী বৃষ্টি। বন্ধ হয়ে গেল বিমানবন্দর। ৬০ থেকে ১০০ কি.মি. বেগে বাতাসে গাছপালা ও ট্রাফিক খুঁটি উপড়ে পড়ে যাচ্ছিল। অবিরাম বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেল, যা গত বছরের শেষ দিকে ঐতিহাসিক চেন্নাই বন্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
সামগ্রিকভাবে হঠাৎ আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পিচ্ছিল রাস্তায় চলাফেরার ব্যাপারে পথচারীদেরও সতর্ক করা হয়েছে। বৃষ্টিতে তাপমাত্রা অনেকখানি কমে গেছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, সর্বনি¤œ তাপমাত্রা হবে ১৪ ডিগ্রি। তবে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী শেখ সইফ বিন জায়েদ এই বৃষ্টির একটি ভিডিও পোস্ট করে আশা প্রকাশ করেছেন, আল্লাহ এই দেশে আরও বৃষ্টি বর্ষণ করুন। খবরে বলা হয়, গত সোমবার দুপুরেই হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে মেঘের গর্জন। মঙ্গলবার দুপুরে সেই বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়লেও বিকালের দিকে থেমে যায়। বুধবার ভোরে সবাইকে অবাক করে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। আবুধাবির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শিলাবৃষ্টি আছড়ে পড়তে থাকে। স্থানীয় মুদ্রা এক দিরামের থেকেও বড় মাপের শিলা ঝরতে থাকে অনবরত। ভোর রাতেই এমন ঘটনার সাক্ষী হতে রাস্তায় নেমে পড়েন অনেকে। কেউ ছাদে উঠে পড়েন শিলা কুড়াতে। দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন