যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে আদেশ প্রদানের তারিখ পিছিয়েছে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নূর নবী শুনানি শেষে নতুন এ তারিখ ঠিক করেন।
এদিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদনের ওপর শুনানি করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ।
শুনানিতে তিনি বলেন, মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে সমনের জবাব দেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার আদালতে হাজির হচ্ছেন না। ন্যায় বিচারের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হোক।
শুনানিকালে মামলার বাদী বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী আদালতে উপস্থিত হন।
এর আগে চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর গত ২২ মার্চ তা আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃতিরূপে পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আলবদর, আলসামস কমিটির সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি বানান।
পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তার মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রীত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রী সভায় মন্ত্রীত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে উক্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলন্ঠিত করেছেন।
অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে সিএমএম আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ওইদিন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম তেজগাঁও থানার ওসিকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন