মাওলানা এ এইচ এম আবুল কালাম আযাদ
\ এক \
পৃথিবীর মূল জনপদ ও সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হিসেবে খ্যাত পবিত্র মক্কা। কারণ এখানেই রয়েছে পবিত্র বাইতুল্লাহ। ইসলামে বাইতুল্লাহর গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামের ৫টি রুকনের একটি হলো হজ্ব। আর এই রুকনটি আদায় করতে হলে অবশ্যই বাইতুল্লাহ যিয়ারত করতে হবে। তাই আমাদের বাইতুল্লাহ সৃষ্টির ইতিহাস জানা উচিৎ। হযরত আদম আ. সর্বপ্রথম বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেন। কিন্তু তা হযরত নুহ আ. এর প্লাবনে ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীতে হযরত ইব্রাহিম আ. তার প্রাণপ্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল আ. কে সেই ধ্বংসস্তুপের নিকটে রেখে আসার সময় দোয়া করেন, হে আমাদের প্রভু। আমি আমার বংশধরদের কিয়দংশকে একটি তরুলতা বিহীন উপত্যকায় আপনার সম্মানিত ঘরের নিকটে বসবাস করিয়েছি। হে আমাদের প্রভু, এ উদ্দেশ্যে যেন তারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। কাজেই কিছু মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দিন, আর তাদেরকে ফল মূল দিয়ে রিযিকের ব্যবস্থা করে দিন। যেন তারা আপনার শুকরিয়া আদায় করতে পারে। (সূরা ইব্রাহিম ৩৭)
এখানে ইব্রাহিম আ. আল্লাহর কাছে তিনটি দোয়া করেছেন। তা হলো ১. তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারে ২. কিছু মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দিন ৩. আর তাদেরকে ফল মূল দিয়ে রিযিকের ব্যবস্থা করে দিন। এই তিনটি দোয়া ইব্রাহিম আ. বিশাল একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে আরেকটি কঠিন পরীক্ষায় নিমজ্জিত হয়ে করেছিলেন ।
হযরত ইব্রাহিম আ. এর প্রথম দোয়াঃ হযরত ইব্রাহিম আ. ১ম দোয়া করেছিলেন - হে আমাদের প্রতিপালক, তারা যেন সালাত কায়েম করতে পারে। একথার অর্থ হযরত ইব্রাহিম আ. আরো প্রার্থনা জানালেন, হে আমার প্রতিপালক, এই অনুর্বর উপত্যকায় তোমার গৃহের সন্নিকটে আমি আমার পরিবার পরিজনকে রেখে যাচ্ছি এ জন্যই যে, তারা যেন তোমার শূন্য গৃহে কেবল তোমার উদ্দেশ্যে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। সম্মানিত পাঠক নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই মসজিদের প্রয়োজন আছে। ইসমাইল আ. যখন একটু বড় হলেন তখন আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম আ. কে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দিলেন।
বাইতুল্লাহ নির্মাণঃ হযরত ইব্রাহিম আ. একবার শামদেশ (সিরিয়া) থেকে মক্কায় আগমন করলেন। সেখানে পুত্র ইসমাইলকে যমযমের পার্শ্বে গাছের নিচে বসে তীর ধনুক ঠিক করছেন দেখতে পেলেন। হযরত ইব্রাহিম আ. এসে তাকে সালাম দিলেন এবং সওয়ারী থেকে অবতরণ করে ইসমাইলের পাশে বসে গেলেন আর ইসমাইলকে উদ্দেশ্য করে কোন ভূমিকা ছাড়াই বললেন:“হে ইসমাইল! আল্লাহ তায়ালা আমাকে একটি কাজ করার হুকুম দিয়েছেন” ইসমাইল বললেন পিতা: আপনাকে যা আদেশ দিয়েছেন তা পালন করুন। তখন ইব্রাহিম আ. বললেন হে ইসমাইল, আমার প্রভু আমাকে তার জন্য একটি গৃহ নির্মাণের আদেশ দিয়েছেন। তখন ইসমাইল আ. বললেন, আমরা কোন স্থানে গৃহ নির্মাণ করবো? এই স্থান নিয়ে বিভিন্ন মতানৈক্য রয়েছে। সম্মানিত পাঠক, বায়তুল্লাহর স্থান বর্ণনা করতে গেলে পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস আগে বর্ণনা করতে হবে। এই পৃথিবী আজকে আমরা যে রকম দেখছি সে রকম ছিলো না। এই পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে পানি আর পানি ছিলো। (তাফসীরে মাজহারী)
রয়িসুল মুফাসসিরিন হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আকাশমÐলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহর আরশ পানির উপরে বিদ্যমান ছিলো।
ইমাম বাগবী রহ. বলেন, জগত সৃষ্টির ২ হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহ এক ঘুর্নিঝড় প্রেরণ করলেন যা এ পানিকে প্রচÐভাবে নাড়া দিল আর এতে কাবা গৃহের অবস্থান স্থলে (বর্তমানে যেখানে কাবা অবস্থিত) গম্বুজের মতো একটি ফেনার সৃষ্টি হলো। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা এর নিচে মাটির পৃথিবীর বিস্তৃতি দেন আর তাতে পর্বতমালা সৃষ্টি করে এতে স্থিতি দান করেন। পৃথিবীকে স্থিতি দানকারী পর্বতের মধ্যে প্রথম পর্বত ছিলো আবু কুবাইস নামক পর্বতটি। এ কারণেই মক্কাকে “উম্মুল কুরা” বা মূল জনপদ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। একাধিক হাদিসে এসেছে হযরত আদম আ. পৃথিবীতে প্রেরিত হওয়ার পর ১ম বারের মতো তিনি এ কাবা গৃহটি তৈরী করেন। এমন জায়গায় তৈরী করেন যার ঠিক উপরে সপ্তম আসমানে বায়তুল মামূর অবস্থিত। আদম নির্মিত এ কাবা হযরত নূহের প্লাবনে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু কাবা গৃহের চিহ্নটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়নি। হযরত ইব্রাহিম আ. ইসমাইলের প্রশ্নে এই ধ্বংস স্তুপের দিকে দেখালেন।
ইসমাইলের প্রশ্নে ইব্রাহিম আ. আল্লাহর কাছে আরজ করলেন, ও আল্লাহ! কোথায় কাবা নির্মাণ করবো? আল্লাহ তখন অবতীর্ণ করলেন একটি সাকীনা দ্বি মস্তকবিশিষ্ট সর্পাকৃতির একটি তীব্র ঘূর্ণিবার্তা। আল্লাহ জানালেন, এই সাকিনা যেখানে গিয়ে স্থির হবে সেই স্থানটিই হবে কাবার স্থান। ঘূর্ণিবার্তা চলতে চলতে নির্ধারিত স্থানে গিয়ে স্থির হলো। সেখানেই হযরত ইব্রাহিম আ. কাবা নির্মাণ শুরু করলেন। (তাফসীরে মাজহারী)
হযরত আলী এবং হাসানের বর্ণনায় রয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন- আল্লাহ পাক অবতীর্ণ করলেন একটি চলমান মেঘ। মেঘখÐটি নির্ধারিত স্থানের দিকে ভেসে চলছিলো। আর ইব্রাহিমও আ. তার ছায়ায় পথ চলছিলেন। মেঘখÐটি একস্থানে এসে স্থির হলো। হযরত ইব্রাহিম আ. সেখানে দাঁড়ালেন। নির্দেশ এলো এখানেই গৃহ নির্মাণ করো।
কোন কোন ভাষ্যকার বলেনÑ আল্লাহ পাকের নির্দেশে হযরত জিব্রাইল আ. ইব্রাহিমকে কাবা শরীফের স্থান দেখিয়ে দিয়েছেন।
হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেনÑ স্থান নির্বাচিত হওয়ার পরে পিতা পূত্র মিলে আরম্ভ করে দিলেন গৃহ নির্মাণের কাজ। এরা দুজনে ভিত্তির খনন কাজ আরম্ভ করলেন আর মুখে উচ্চারণ করতে লাগলেনÑ “রব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আংতাস সামিউল আলীম”
আর স্মরণ করো, ইব্রাহিম আ. ও ইসমাইল আ. যখন এই গৃহের প্রাচীর নির্মাণ করেছিল, তখন তারা দোয়া করে বলেছিলঃ “হে আমাদের রব! আমাদের এই খেদমাত কবুল করে নাও। তুমি সবকিছু শ্রবণকারী ও সবকিছু জ্ঞাত”। (সূরা আল-বাক্বারাহ-১২৭)
হযরত ইব্রাহিম ও ইসমাঈল আ. দুজনে মিলে ভিত্তির জন্যে মাটি খনন করে ভিত্তির কাজ শুরু করে দিলেন। হযরত ইসমাঈল আ. পাথর বয়ে আনতেন আর বৃদ্ধ হযরত ইব্রাহিম আ. নির্মাণ কাজ চালাতেন। (ইব্রাহিম আ. মিস্ত্রি আর ইসমাইল আ. যোগালীর ভূমিকা পালন করেছেন)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন- হযরত ইব্রাহিম আ. পাঁচটি পাহাড় থেকে পাথর এনেছেন। পাহাড়গুলো হলো- ১. হেরা ২. সিনাই ৩. সিরিয়ায় অবস্থিত লুবনান ৪. জুদি এবং ৫. জায়তা। ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল হেরা পর্বতের পাথর দ্বারা। দেয়ালের গাঁথুনি যখন বর্তমানে রক্ষিত হাজরে আসওয়াদের উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছালো তখন ইব্রাহিম আ. বললেন, ইসমাইল এখানে সুন্দর একটি পাথর স্থাপন করো, যাতে এদিকে তাওয়াফকারীদের অন্তর আকৃষ্ট হয়। ইসমাইল আ. অনেক অনুসন্ধান করে একটি পাথর নিয়ে এলেন। কিন্তু ইব্রাহিমের তা মনঃপুত হলো না। তিনি এর চেয়ে সুন্দর পাথর সংগ্রহ করতে নির্দেশ দিলেন। পূনরায় অন্বেষণে লিপ্ত হলেন হযরত ইসমাইল আ.। পাহাড়ে পাহাড়ে সুন্দর পাথর খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় আবু কুবাইস পাহাড় থেকে উচ্চারিত হলো - হে ইসমাঈল! আপনার একটি গচ্ছিত সম্পদ রয়েছে আমার জিম্মায়। সম্পদটি নিয়ে আমাকে দায়মুক্ত করুন। হযরত নূহ আ. এর প্লাবনে হযরত আদম আ. নির্মিত কাবা প্লাবিত হয়ে গেলে আল্লাহ তায়ালা জিব্রাইলকে নির্দেশ দেন হাজরে আসওয়াদ পাথরটি সংরক্ষণ করার জন্য। (আদম আ. জান্নাত থেকে আসার সময় এ পাথরটি নিয়ে এসেছিলেন এবং তিনি কাবা নির্মাণের পরে এ পাথরটি দেয়ালে স্থাপন করেছিলেন) জিব্রাইল আ. পাথরটি নিয়ে আবু কুবাইস পর্বতে রেখে দেন। হযরত ইসমাইল আ. পর্বতের ভিতর হতে পাথরটি নিয়ে কাবা শরীফের দেয়ালে রাখলেন। যাতে করে এ পাথর থেকে মানুষ কাবা গৃহের তাওয়াফ আরম্ভ করতে পারেন। এভাবেই হাজরে আসওয়াদ পেলো তার যথা অবস্থান। তখন এ পাথরটির শুভ্রতা এত বেশী প্রখর ছিল যে এর আলোতে পারিপার্শ্বিক অঞ্চল সমূহ আলোকিত হয়ে যেত। কিন্তু পরবর্তীতে কাবাগৃহে দুবার আগুন লেগে পাথরটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং কালো বর্ণ ধারণ করে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
অন্ধকার যুগের অপবিত্রা এক নারীর স্পর্শে পাথরটি হয়ে পড়ে জ্যোতিহীন, কালো। ( তাফসীরে মাজহারী)
মুশরিকদের অপবিত্র স্পর্শ্বের কারণেই নাকি তা কালো বর্ণে পর্যবসিত হয়। সম্মানিত পাঠক, এ পাথরটিই বর্তমানে পৃথিবীর বুকে বিদ্যমান একমাত্র পাথর যা বেহেশত হতে প্রেরিত। এটা আল্লাহর একটা বিশাল কুদরত। হাজী সাহেবানদের জন্য এ পাথরে চুমু দিতে পারার সুযোগ এক বিরল সৌভাগ্যই বটে।
এক পর্যায়ে গৃহের দেয়াল উচু হয়ে গেলে (উচ্চতা কোমর পর্যন্ত হলে) ইব্রাহিম আ. এর পক্ষে তা নাগাল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ল। তখন ইসমাইল আ. একটি পাথর খন্ড সংগ্রহ করে নিয়ে এলেন। (উচ্চতা কোমর পর্যন্ত হলে আমাদের দেশে বাশেঁর মাচা তৈরী করে) হযরত ইব্রাহিম আ. এর উপর দাঁড়িয়ে কাবা গৃহের গাঁথুনী কর্ম সম্পাদন করেন। হাদীসে এসেছে কাবা গৃহের দেয়াল যতই উচু হতে লাগল পাথরটির উচ্চতাও ততই বৃদ্ধি পেতে লাগলো। তাছাড়া পাথরটির পৃষ্ঠে ইব্রাহিম আ. এর দু পায়ের স্পষ্ট ছাপ আজও বিদ্যমান। যা একটু গভীর ভাবে লক্ষ্য করলেই দর্শকের কাছে দৃষ্ট হবে। গৃহের চতুর্দিকের দেয়াল নির্মাণে এ পাথরটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যবহার করতেন। তখন থেকে এ পাথরটি মাকামে ইব্রাহিম নামে পরিচিত। অবশেষে গৃহের সম্মুখে এসে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করলেন। (তখনও পর্যন্ত কাবার কোন ছাদ ছিলো না)
বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেছেন যে- ইব্রাহিম আ. যখন কাবা গৃহের নির্মাণ কার্য সমাপ্ত করলেন তখন জিব্রাইল আ. এসে তাকে বললেন: এবার এর চতুস্পার্শ্বে সাত চক্কর তাওয়াফ করে নিন। তখন তিনি এবং ইসমাইল আ. কাবা গৃহের চতুর্দিকে সাতবার তাওয়াফ করলেন। প্রত্যেক তাওয়াফে চারটি কোনার প্রত্যেকটি একবার করে স্পর্শ করতেন। সম্মানিত পাঠক, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের এই তাওয়াফকে এত পছন্দ করেছেন যে কেয়ামত পর্যন্ত জারী রাখার জন্যে উম্মতে মুহাম্মদীর উপরে এই তাওয়াফকে হজ্বের ফরজ করে দিয়েছেন। (সুবহান আল্লাহ)
সাত চক্কর তাওয়াফ শেষে তিনি এবং ইসমাইল আ. মাকামে ইব্রাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে দু রাকাত নামাজ আদায় করলেন। সম্মানিত পাঠক, আমার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের এই নামাজকে এত পছন্দ করেছেন যে কেয়ামত পর্যন্ত জারী রাখার জন্যে উম্মতে মুহাম্মদীর উপরে এই নামাজকে হজে¦র সুন্নাত করে দিয়েছেন। (সুবহান আল্লাহ)
হজ্জের আহবানঃ হযরত জিব্রাইল আ. তাদের সাথে দাড়িয়ে তাদেরকে হজ্জের রীতিনীতি বিস্তারিতভাবে শিখিয়ে দিলেন। অতঃপর জিব্রাইল আ. তাদেরকে নিয়ে আরাফাতে পৌঁছলেন। তখন জিব্রাইল আ. হযরত ইব্রাহিম আ. কে প্রশ্ন করলেন, “হাল আরাফতা মানাসিকাকা” আপনি কি হজ্জের নিয়ম কানুন জেনে নিয়েছেন? তখন হযরত ইব্রাহিম আ. উত্তর দিয়ে বললেন- “আরাফতু” হ্যাঁ আমি জানি। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম আ. কে হুকুম দিয়ে বললেন- তুমি শুধু নিজে জানলেই হবে না, তুমি জনতার উদ্দেশ্যে হজ্জের আহবান জানাও। আল্লাহ বলেন- “এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও। যেন তারা প্রত্যেকে দূরÑ দূরান্ত থেকে পায়ে হেটে ও উটের পিঠে চড়ে আসে”। (সূরা আল-হাজ্জ-২৭)
হযরত ইব্রাহিম আ. বললেন ও আল্লাহ! আমার আওয়াজতো বেশী দূর পৌঁছবেনা। ইমাম মাজহারী রহ. বলেন, ইব্রাহিম আ. হজ্বের আহবান জানানোর উদ্দেশ্যে একটি পাথরের উপর দাঁড়ালেন। সেই পাথরটি এত উচুতে উঠে গিয়েছিল যে, পৃথিবীর যে কোন পর্বতের চাইতেও এর উচ্চতা বেড়ে গিয়েছিল। (বর্তমানে সবচেয়ে বড় পর্বত চূড়া হলো মাউন্ট এভারেষ্ট। যার উচ্চতা হলো ৮৮৫০ মিটার) সেদিন হযরত ইব্রাহিম আ. এর জন্য গোটা দুনিয়ার সমস্ত জায়গা ও জগৎ বাসীকে তার নিকটবর্তী করে দেয়া হয়েছিল।
তিনি সেখান থেকে বিশ্ববাসীকে উদ্দেশ্য করে একেকবার একেক দিকে মুখ করে আহবান জানালেন: অর্থাৎ “হে মানব গোষ্ঠী, তোমাদের উপর প্রাচীন গৃহের উদ্দেশ্যে হজ্ব পালনের বিধান নির্ধারিত হয়েছে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের এ আহবানে সাড়া দাও”। তখন চতুর্দিক থেকে উত্তর এসেছিল “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” হে প্রভু আমরা আপনার দরবারে উপস্থিত। সেদিন রূহের জগত থেকেও যারা হযরত ইব্রাহিমের এ আহবানে সারা দিয়েছিল তাদের ভাগ্যে হজ্জ সম্পাদন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এখন যারা হজ্জ করে তাদের সবারই রূহ ইব্রাহিমের আহবানে “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” বলে উঠেছিল আলমে আরওয়ায়। আমাদের রূহটাও আল্লাহ তায়ালা তাদের রূহের মধ্যে কবুল করে নিন। আমীন!!
লেখকঃ
সভাপতি: বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ, টাঙ্গাইল জেলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন