কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরেই শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মাঝে তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক পদে ভিসির বন্ধুর মেয়েকে নিয়োগ দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মাঝে এই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীকে ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়ে অনিয়ম করেছেন ভিসি। ঐ শিক্ষার্থীকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল ভিসির দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই। ঐ শিক্ষার্থী (বর্তমানে প্রভাষক) ভিসির বন্ধুর মেয়ে বলে জানা যায়। ভিসি তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাবেক ঐ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার নাম্বার বাড়িয়ে দিতে বিভিন্ন সময়ে ঐ বিভাগের শিক্ষকদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে, ইংরেজী বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ভিসি বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের তার কার্যালয়ে ডেকে এনে নাম্বার বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলতেন। নাম্বার বাড়িয়ে না দিলে দেখে নেয়ার হুমকি দিতেন ভিসি । এদিকে ভিসি তার বন্ধুর মেয়েকে নিয়োগ দেয়ার লক্ষে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিও করেছেন ঐ প্রভাষকের রেজাল্টের ভিত্তিতে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে নানা গুঞ্জন এই শিরোনামে গত ২৮ এপ্রিল বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এছাড়াও নিয়োগের জন্য গঠিত প্লানিং কমিটি নিয়েও নানা বিতর্ক তৈরি হয় ইংরেজী বিভাগে। নির্দিষ্ট ঐ প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য পছন্দের শিক্ষকদের দিয়ে প্ল্যানিং কমিটি গঠিত হওয়ায় এবং প্ল্যানিং কমিটিতে বিদ্যমান শিক্ষকদের এক-তৃতীয়াংশ না রেখে ভিসির কাছের তিনজন শিক্ষক নিয়ে প্ল্যানিং কমিটি গঠন করা হয়। প্ল্যানিং কমিটি গঠনে অনিয়ম হয়েছে এ অভিযোগ এনে গত ২৫ মে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হায়াত বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এ নিয়েও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে কোন কিছুই আমলে না নিয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফ গত ৮ জুন নিয়োগ বোর্ড ডাকেন। নিয়োগ প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত, অনুষদে প্রথম স্থান অধিকারী থাকলেও বিভাগে তৃতীয় স্থানে থাকা তার বন্ধুর ঐ মেয়েকে নিয়োগ দেন। এছাড়াও নিয়োগে মাত্র এক দিনের মাথায় সিন্ডিকেট ডেকে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, নিয়োগ প্রাপ্ত ঐ প্রভাষকের ¯œাতকোত্তরের গবেষণা পত্র নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। ঐ প্রভাষক শিক্ষার্থী থাকায় অবস্থায় কোর্স ওয়ার্ক হিসেবে অ্যাপলাইড লিঙ্গুয়েস্টিক বা প্রায়োগিক ভাষা তত্তে¡র শিক্ষার্থী হয়েও সাহিত্যের উপর গবেষণা করেছেন যা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আগের দুটি ব্যাচের প্রথম, দ্বিতীয় এবং ঐ প্রভাষকের ব্যাচের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারীদের বাদ দিয়ে ভিসি নির্দিষ্ট প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের নজির স্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে মেধা শূন্য করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন ভিসি ।’ আভিযোগের বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিশ্রামে আছেন বলে জানান তার বাসভবনের কর্মচারী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন