স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের ব্যর্থতার কারণেই সমাজে অনাচারের জন্ম হয়, ঘুষ-দুর্নীতি-দুবৃর্ত্তায়ন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারই সকল অনাচারের জন্য দায়ী।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ মিলনায়তনে ‘চিরবিপ্লবী ভাষা সৈনিক অলি আহাদের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভাষা সৈনিক অলি আহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাণী প্রদান না করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, অলি আহাদ-ভাষা মতিনরা ভাষা আন্দোলন না করলে দেশ স্বাধীন হতো না। ভাষা আন্দোলনই হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ। আর দেশ স্বাধীন না হলে হাসিনা-খালেদা কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন। তা না হলে থালা নিয়ে রাস্তায় হাটতে হতো অনেককে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, একটি জাতির সবাই জাতীয় বীর নয়। জাতীয় বীর থাকে কয়েকজন। অলি আহাদ আমাদের তেমনই একজন জাতীয় বীর। যাদের কারণেই আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। তাদের সম্মান না করলে অন্ধকার দূর হবে না। অলি আহাদকে শ্রদ্ধা জানাতে গণমাধ্যমগুলোর কার্পণ্যতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী, অলি আহাদ, ভাষা মতিনের মত জাতীয় বীরদের সম্মান করতে না পারা জাতির জন্য লজ্জাজনক।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ মায়ের ফুটপাতে সন্তান প্রসবে হাইকোর্টের সুয়োমোটো রুল জারি করায় বিচারপতিদের ধন্যবাদ জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিরোধীদলের প্রায় ১৫-২০ ভাগ নেতাকর্মী জেলে। তাদের জামিন কেন হয় না ? এই বিষয়েও বিচাপতিদের ভূমিকা রাখা উচিত। বিচারপতিদের ঘুমিয়ে থাকলে হবে না। বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। না হলে তাদের পরিণতিও এসকে সিনহার মতো হতে পারে।
গত বুধবার আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার সাহসী বক্তব্যের প্রশংসা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বেগম জিয়া সাহসী ও ভালো কাজ করেন। কিন্তু সেটা দেরীতে করেন। আর এই কারণেই আন্দোলন গড়ে উঠে না। অলি আহাদ-ভাষা মতিনরা আন্দোলন সংগ্রাম বুঝতেন। তাদের প্রদর্শিত পথেই আন্দোলন গতে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতির সামনে আরও দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে। সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি বাংলাদেশকে ভূটান-সিকিম বানাতে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ভাসানী-অলি আহাদ-ভাষা মতিনের প্রদর্শিত পথে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি মুহা. মোস্তাফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ভাষা সৈনিক আবদুল জলিল, ভাষা মতিনের স্ত্রী গুলবদন্নেছা মনিকা মতিন, পিডিপি মহাসচিব এহসানুল হক সেলিম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কৃষক দল নেতা শাহজাহান মিয়া স¤্রাট, ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, দেশবাাঁচও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন, ঘুড়ে দাড়াও বাংলাদেশ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন সভাপতি এম জাহাঙ্গির আলম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রমজান আলি প্রমুখ।
গুলবদন্নেছা মতিন বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারীর ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে ভাষা আন্দোলনের বিজয় ছিনিয়ে আনতে অলি আহাদ-ভাষা মতিনদের অবদান জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তিনি ভাষা সৈনিকদের তালিকা প্রনয়ন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন