আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা দলটির পূর্বপরিকল্পিত। এর স্বপক্ষে তিনি বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হোসেনের একটি টেলিফোন রেকর্ডও শোনান। এসব দুষ্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা দেখতে চাই আমরা। কারা এ ঘটনা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছেন তাও জানতে চাই। কারা এ ঘটনা ঘটিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ঘোলা করতে চায় তা জানা প্রয়োজন। বিএনপি সরকারের প্রতি দায় চাপিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। প্রমাণ হয়েছে দলটি সবসময়ই ষড়যন্ত্র করে। গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এনাম-আনার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মেধাবী গরীব ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়ার সফরকালে কোন ধরণের বিঘœ সৃষ্টি যাতে না হয় এবং তাদের সহায়তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিষ্কার নির্দেশ দেয়া ছিল। এখানে আমাদের নেতাকর্মীরা কেন যাবেন? তাদের এখানে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। ৩ মাস ধরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, ভরণ পোষণ দেয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের নিবন্ধনও করা হচ্ছে। পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে তখন তিনি (খালেদা জিয়া) রোহিঙ্গাদের প্রতি দরদ দেখাতে কক্সবাজার গেছেন।
রোহিঙ্গাদের প্রতি দরদ ও মানবতার জন্য খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাচ্ছেন না মন্তব্য করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, তিনি যদি মানবতার জন্য সেখানে যেতেন। তাহলে বিমানে গিয়ে ত্রাণ দিয়ে আবার চলে আসতেন। মানবতার দোহাই দিয়ে রাজনৈতিক শোডাউন করার লক্ষ্য ছিল তার। তাতে তিনি সক্ষমও হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশেরই নেত্রী নয়। দূরদর্শীতা ও মানবিকতার মাধ্যমে নিজেকে বিশ্বে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। যখন দেশ-বিদেশের প্রশংসা কুড়িয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন একটি দল দেশকে পিছিয়ে নিতে ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের বিজয়ী হতে হবে। নির্বাচন সামনে রেখে নানা রকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যার যেটা দায়িত্ব নয়, তারা সেই কাজ করার অপ্রচেষ্টা করছেন। সাংবিধানিক পদে থেকে কেউ কেউ ইতিহাস চর্চা করছেন। এটা তার দায়িত্ব নয়। এখতিয়ার বহিভ‚র্ত। তাদের দায়িত্ব কিভাবে পালন করবে সেগুলো নিয়ে কথা না বলে ইতিহাস চর্চা করছেন। এটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে, আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে মেধাবী গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্রী সানজিদা খানম তিশা, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী রীনা আক্তার মীম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী আজমেরী সুলতানা জুঁই, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্র শাকিল আহমেদ, সিলেট মেডিকেল কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ইকরাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র সৌরভ কুমার মাহাতো, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী জারিন, কিশোরগঞ্জ মেডিকেল কলেজের সপ্তষী মাহাতোকে এনাম-আনার জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা ও ৩ টি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের সার্বিক সহযোগিতায় লেখাপড়া করছেন সৈয়দপুরের তারাগঞ্জের মেয়ে কামরুন্নাহার তার জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তার সংগ্রামী জীবনের কথা শুনে উপস্থিত সাংবাদিকেরাও কেঁদে ফেলেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ছাত্র শাকিল আহমেদ বলেন, আমরা গরীবের সন্তান। এনাম-আনাম ফাউন্ডেশনের অর্থ দিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। আমি পূর্ণ ডাক্তার হওয়ার পর সমাজের অবহেলিত, অনাথ ও গরীবের সেবায় আত্মনিয়োগ করবো।
এনাম-আনার জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আকরামুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল আজিজ, কুষ্টিয়া জেলার খোকসা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বিটু, সংগঠনের সম্পাদক এম মামুন হুসাইন, সমন্বয়ক ও সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রনি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটির মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক ঝর্না মনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন