শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল আজ-আপন আলোয় জ্বলে ওঠার দৃঢ় প্রত্যয়

বাড়ছে কমিটির আকার আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৫ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০১৬

আফজাল বারী : দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, দেখা-অদেখা সকল বাধা কাটিয়ে আপন আলোয় জ্বলে উঠতে চায় বিএনপি। দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলটির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। এবারের কাউন্সিলের মূল স্লোগান হচ্ছে, ‘দুর্নীতি-দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিতব্য এই কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। দেশ-জাতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঘণ্টাব্যাপী দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তিনি। এতে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে দল সুসংগঠিত করার প্রসঙ্গ যেমন থাকবে, তেমনি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী দিনে দলীয় অবস্থানও তুলে ধরবেন বিএনপির শীর্ষ নেতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভিডিও বক্তব্য দেবেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলীয় সূত্রমতে, এবারের কাউন্সিলে কমিটি ঘোষণা দেয়া হচ্ছে না। শুধু চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারপার্সনের পুনর্নির্বাচনের ফলাফলের অনুমোদন দেয়া হবে। ঢাকায় আগত একাধিক কাউন্সিল ও ডেলিগেটের দাবি, শীর্ষ দুই নেতার মতো আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদ বিএনপির মহাসচিবের নামটিও যেন ঘোষণা করা হয় এবং দীর্ঘ ছয় বছরের ভারমুক্তি দেয়া হয় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।
এদিকে দলীয় নেতাদের খুশি রাখতে এবারো বিএনপির নির্বাহী কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। কমিটির ১৫টি বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি রাখা হচ্ছে, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৫, যুগ্ম মহাসচিব ৭ জন থেকে বাড়িয়ে ৯ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক ৬ জন থেকে ১১ জন এবং সহ-সাংগঠনিক ২২ জন নেতাকে ঠাঁই দেয়া হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ও থানার নেতৃত্বে আর থাকতে পারছেন না।
বিএনপি জানিয়েছে, এরই মধ্যে কাউন্সিল আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি ও ১১টি উপকমিটি স্ব স্ব দায়িত্ব শেষ করেছে। কাউন্সিলর কার্ড ও ডেলিগেট কার্ড বিতরণও শেষ। প্রায় ৩ হাজার কাউন্সিলর থাকছেন অনুষ্ঠানে। কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি ও উৎসুক নেতা-কর্মী সব মিলিয়ে উপস্থিতির সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে দলটির নেতারা ধারণা করছেন।
গতকাল শুক্রবার কাউন্সিল ভেন্যুতে গিয়ে দেখা গেছে, ভেন্যুকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। মঞ্চ তৈরি, আগতদের বসার স্থান তৈরির কাজ শেষ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ভিতরের চত্বরে কেবল কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিদের বসার জায়গা করা হয়ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে বসবেন ডেলিগেটরা। এছাড়া কাউন্সিল এলাকার নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী, সিসি টিভি, আর্চওয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনটি মঞ্চের মধ্যে একটিতে বিএনপির কাউন্সিলে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখবেন এবং দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এটির দৈর্ঘ্য হবে ৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। দ্বিতীয় মঞ্চটিতে থাকবেন শিল্পীরা। এর দৈর্ঘ্য হবে ৩৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। তৃতীয় মঞ্চটি সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ থাকছে। এই মঞ্চের দৈর্ঘ্য ১৮ ফুট এবং প্রস্থ হবে ১২ ফুট।
সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হবে মধ্যহ্নভোজের মধ্য দিয়ে। খাবার বিতরণের ১৯টি টিমে কাজ করবে ৭ হাজার স্বেচ্ছাশ্রমী। বিকাল তিনটা থেকে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার কাউন্সিল অধিবেশন। কাউন্সিলের আলোচ্যসূচিতে রয়েছেÑ শোক প্রস্তাব উপস্থাপন, দলের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির রিপোর্ট পেশ, মহাসচিবের সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধন।
বিএনপির কাউন্সিলের এবারের মূল স্লোগানÑ‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ।’ কাউন্সিল উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তৈরি হয়েছে লোগো, ওয়েবসাইট ও থিম সং। যুব দলÑ‘তারুণ্যে যারা অকুতোভয়, তারাই আনবে সুর্যোদয়’, কৃষক দলÑ ‘ফলাবো ফসল, গড়বো দেশ, গণতন্ত্রে বাংলাদেশ’, মুক্তিযোদ্ধা দলÑ ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র, মুক্ত করো গণতন্ত্র’, শ্রমিক দল- ‘শ্রম দিয়ে শিল্প গড়বো, দেশের আঁধার ঘুচিয়ে দেবো’, মহিলা দলÑ ‘চেতনায় নারী, বিপ্লবে নারী, গণতন্ত্র ফেরাতে আমরাই পারি’, ছাত্র দলÑ ‘বাঁচতে চাই, পড়তে চাই, দুর্নীতি মুক্ত দেশ চাই’, স্বেচ্ছাসেবক দলÑ ‘আলোর দিন দূরে নয়, করতে হবে আঁধার জয়’, জাসাসÑ‘গাইবো মোরা গণতন্ত্রের গান, দুঃশাসনের হবেই অবসান,’ তাঁতী দলÑ ‘শক্ত হতে বাঁধো তাঁত, কাটাতে হবে আঁধার রাত’, মৎস্যজীবী দলÑ‘জালের টানে ঘুচবে আঁধার, বাংলাদেশ সবার’ এবং উলামা দলÑ ‘জিয়ার আর্দশে দেশ গড়বো, ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখবো’। নিজ নিজ স্লোগানের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে নগরজুড়ে জানান দিয়েছে বিএনপি
সূত্র জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে আগামী দিনের দলীয় রাজনীতির দিকনির্দেশনা থাকবে। পাশাপাশি নতুন করে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিবেন এবং আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরবেন। এছাড়া দেশবাসীর উদ্দেশে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সহিংসতা, হত্যা, গুম, নারী নির্যাতন, শিশু হত্যা ও দুর্নীতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরবেন খালেদা জিয়া।
এদিকে কাউন্সিলর প্রস্তুতির বিষয়ে শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে ইতোমধ্যে সারাদেশের বিএনপি নেতাকর্মী ও কোটি কোটি সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিএনপির এবারের কাউন্সিল রাজনীতির ইতিহাসে নাম লেখাবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী আহম্মেদ।
কাউন্সিলে প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন
কাউন্সিল উপলক্ষে সুুভেনিরসহ ৭টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে কাউন্সিল উপ-কমিটি এই ৫টি বই প্রকাশ করেছে। গ্রন্থগুলো হচ্ছে Ñ উন্নয়ন ও অর্জনে বিএনপি, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান, দেশবাসীর প্রতি দেশনেত্রী, শোকার্ত স্বদেশ : আরাফাত রহমান কোকো, ইরিশন অব ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ, রাইট অব লাইভ : এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ ২০০৯-২০১৬, এ ন্যাশনাল স্ট্যাটেজি টু কাউন্টার ট্যারোরিজম এন্ড এক্সটিমিজন।
এছাড়া কাউন্সিল উপলক্ষে আনম এহছানুল হক মিলনের লেখা ‘যুগনায়ক জিয়া’, আব্দুুল হাই শিকদারের লেখা ‘তারেক রহমান এবং বাংলাদেশ’, শায়রুল কবির খানের সম্পাদিত ‘সাদা চোখে : পত্রিকার পাতা থেকে’ এবং রুহুল আমিনের লেখা বেগম ‘খালেদা জিয়া : বিএনপি ও বাংলাদেশ’ গ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে পুরানা পল্টনে জামান টাওয়ারে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল-২০১৬ উপকমিটির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে ১১ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এসব গ্রন্থ বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপকৃত করবে। এগুলো সবাই পড়বেন। এতে দল ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ, উপকমিটির সদস্য আব্দুুল হাই শিকদার, মোহাম্মদ রেদোয়ান আহমেদ, মোশাররফ হোসেন ঠাকুর, মনিরুজ্জামান মনির, শাহজাহান স¤্রাট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি ও কাউন্সিল
ঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্ত্বরে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল (বিএনপি)’ নামে এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। ডা. বদরুদ্দেজা চৌধুরী হন প্রতিষ্ঠাকালিন মহাসচিব। দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি আব্দুস সাত্তার চেয়ারম্যান এবং ডা. বদরুদ্দেজা চৌধুরী মহাসচিব হন। আট বছর পর ১৯৮৯ সালের ৮ ও ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির তৃতীয় কাউন্সিল। সেই কাউন্সিলে বেগম খালেদা জিয়া চেয়ারপার্সন এবং ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার হন মহাসচিব। ১৯৯৩ সালের ১, ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি চতুর্থ কাউন্সিল করে। সেই কাউন্সিলৈ খালেদা জিয়া চেয়ারপার্সন এবং আব্দুল মান্নান ভুইয়া মহাসচিব হন। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্চম কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপরসন এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন নির্বাচিত হন বিএনপির মহাসচিব। যথারীতি তিন বছর পরে আবারো কাউন্সিল করার কথা থাকলেও তা করতে পারেনি বিএনপি। আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৬ষ্ঠ কাউন্সিল।
এবারো বিশাল কমিটি
আবারো বড় আকারের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবার নির্বাহী সংখ্যা পাঁচশ’ ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকের কাউন্সিলে পাশ হলে তা গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে আজ কমিটি ঘোষণা করা হবে না। শুধু চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া কাউন্সিলে তা পাশ হবে। যদিও মহাসচিব পদে কে আসছেন তা আজ স্পষ্ট করার পক্ষে একাংশ। অন্য অংশ, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পরে আসা উচিত বলে মনে করেন। তাই এখনি বলা যাচ্ছে না, আজ মহাসচিব পদ কারো নাম ঘোষণা আসবে কি-না।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ১১ ধারা অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাহী অনূর্ধ্ব ৩৫১ জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। তবে দলের চেয়ারম্যান কর্মকর্তা বা সদস্যদের সংখ্যা নিরূপনে বিশেষ ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে পারবে কিন্তু মোট সদস্য সংখ্যা ৩৫১ জনের ঊর্ধ্ব দশ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না। এই দশ শতাংশ বাড়িয়ে বর্তমান কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩৮৬ সদস্যের।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ টি বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করা হবে, যাতে জায়গা হবে দেড় থেকে দুইশ’ নেতা-কর্মীর। যদিও উপ-কমিটিগুলোর নেতা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতা নয়, তবে কমিটির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা নির্বাহী কমিটির সদস্যের সমমর্যাদার হবেন।
সূত্রমতে, নির্বাহী কমিটির সদস্যরা কেউ জেলা এবং থানা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না। তবে অন্য পদে থাকতে পারবেন। এক নেতার একাধিক পদকে নিরুৎসাহিত করতে এ ধারাটি অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে গঠনতন্ত্রে।
জানা গেছে, বৈঠকে তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যানের প্রস্তাব তোলেন জমির উদ্দিন সরকার। আরেক সদস্য সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব কী হবে তা নির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করেন, দুটি প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিসদ করার প্রস্তাব এলেও তা বাতিল হয়ে যায়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষণাপত্রে কিছু পরিবর্তন আসছে। সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং জঙ্গিবাদ দমনে দলের সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকবে।
দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক সূত্র বলছে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার পাশাপাশি বিএনপির উপদেষ্টা নামে আরেকটি ফোরাম হবে, যেখানে বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাজীবীরা থাকবেন; যারা নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা হবে। ভাইস চেয়ারম্যানের সংখ্যা ১৭ থেকে বেড়ে ৩৫ জন হবে। এবার চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার সংখ্যা তবে ৫০ এর অধিক। বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ উপদেষ্টারাও ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদার।
এর বাইরে যুগ্ম মহাসচিব হবে ৯ জন। সাংগঠনিক সম্পাদক ১১ জন। তবে প্রতি বিভাগে দুইজন করে অর্থাৎ মোট সহ-সাংগঠনিক হবে ২২ জন। সহ সাংগঠনিক সম্পাক পদে মহিলা নেত্রীদের প্রাধান্য পাবেন। আন্তর্জাতিক ও সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক হচ্ছেন মোট ১৪ জন। এছাড়া প্রায় সহ সম্পাদক পদ-ই বাড়ছে। তবে সহ দফতর সম্পাদক আগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক তিনজনই থাকছে। যদিও বর্তমানে চার সহ দফতর সম্পাক আছেন। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ছে না। অনেক গুঞ্জন থাকলেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্য সংখ্যা ১৯ জনই থাকছে।
মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার অনুপস্থিতি
ঢাকা মহানগরের শীর্ষ দুই নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা কেউই কাউন্সিলে যোগ দিতে পারলেন না। এই দুই নেতার অনুসারীদের সবাই ভারাক্রান্ত। নগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মতেÑএই দুই নেতা বিএনপির কাউন্সিলের আগাগোড়া থেকে সম্পৃক্ত থাকতে পারলে কাউন্সিল আরো জাঁকজমকপূর্ণ হতো।
গত কাউন্সিলে মির্জা আব্বাস ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে নেতাকর্মীদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। এবার তিনি কারাগারে। জামিন হলেও তা ফের স্থগিত হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসসহ বেশ কিছু রোগে ভুগছেন মির্জা আব্বাস। ওদিকে সাদেক হোসেন খোকা গত কাউন্সিলে আপ্যায়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। তারও প্রশংসা ছিল নেতাকর্মীদের কাছে। তিনি এখন নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন। তবে বন্দি ও বিদেশে থাকলেও কাউন্সিলে শুধু শারীরিক উপস্থিতি নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন