ঢাকায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) ৬৩তম সম্মেলনের প্রথম পর্যায়ে স্মল ব্রাঞ্চেস থেকে দুর্নীতি দূর করা, রাষ্ট্রর সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তির কাজে স্বচ্ছতা, নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করা, জলবায়ু দূষণরোধে কার্যকর ভূমিকা নেয়াসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উঠে এসেছে।গত ২ নভেম্বর শুরু হওয়া স্মল ব্রাঞ্চেসের বিভিন্ন সেমিনার শেষে গতকাল শনিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সিপিএ মিডিয়া কমিটির সদস্য তানভীর ইমাম এমপি সংরক্ষিত নারী আসনের অ্যাডভোকেট ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি এ তথ্য জানান। আজ ৫ নভেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিতীয় পর্বের সম্মেলন শুরু হবে। প্রস্তাবগুলো সেখানে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে উত্থাপন করা হবে। সিপিএ অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি দেশের জনসংখ্যা ৫ লাখের নিচে। এসব দেশকে সিপিএ’র স্মল ব্রাঞ্চ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাপ্পি বলেন, কমনওয়েলথ উইমেন পার্লামেন্টটারিয়ানদের (সিডব্লিউপি)স্টিয়ারিং কমিটির যে বৈঠকগুলো ছিল সেখান থেকে কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। নারীদের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। সিপিএ-এর আওতায় ৫২টি দেশের মধ্যে ১২টি দেশে কোনো নারী সংসদ সদস্য নেই। অথচ সারা বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। এ অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে কিংবা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত না করে উন্নয়ন আশা করা যায় না। এমন একটা পৃথিবী চাই যেখানে নারী ও পুরুষের সমতা থাকবে। এজন্য কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারীদের সংসদে দেখতে চাই। সিডব্লিউপি থেকে এ সুপারিশ এসেছে।
তিনি বলেন, সিডব্লিউপি প্রতিনিধিদের নিয়ে শুক্রবার জাতীয় মহিলা সংস্থায় দেখানো হয়েছে কীভাবে তৃণমূল পর্যায়ের প্রান্তিক নারীরা অর্থনৈতিকভাব সফল হচ্ছেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেলের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারও তাদের দেখানো হয়। গতকাল (শনিবার) সিডব্লিউপি’র প্রতিনিধিরা টঙ্গীতে পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন।
মিডিয়া কমিটির আরেক সদস্য তানভীর ইমাম এমপি বলেন, শুক্রবার দ্বিতীয় প্ল্যানারি সেশন থেকে চারটি সুপারিশ এসেছে। এর প্রথমটি ছিল সিপিএ স্মল ব্রাঞ্চেস নিজেদের এবং বিশ্বের অন্যদেশগুলোকে কারিগরি সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে উৎসাহিত করা। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল সিপিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্পদ এবং অভিজ্ঞতা বিনিমিয়ের মাধ্যমে নিজ অধিক্ষেত্রে কাজ করে যাবে। তৃতীয়টি ছিল সিপিএ নিয়মিতভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দাতা সংস্থার সঙ্গে স্মল ব্রাঞ্চেস দেশগুলোর বৃহত্তর পরিসরে সহযোগিতা করে যাবে। আর চতুর্থ সুপারিশ ছিল সিপিএর সংসদ ও এমপিদের জন্য সহযোগিতামূলক সেবা ও সুযোগ তৈরিতে দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করবে।
বাপ্পী বলেন, তৃতীয় দিনের সেশনে প্রস্তাব হল দুর্নীতি বন্ধের ক্ষেত্রে আইন প্রণেতারা ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে তিনটি সুপারিশের কথা উল্লেখ করার মত। একটি হল-রাষ্ট্র রাজনীতি ও সম্প্রদায় থেকে যে কোনো মাত্রার দুর্নীতি দূর করতে আইন প্রণয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবশ্যই রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং সম্প্রদায় থেকে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পরের প্রস্তাব ছিল সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে উচ্চতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের বিপরীতে আইন প্রণয়ন করা। এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকরভাবে স্থাপন এবং কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের যে কাঠামোগুলো রয়েছে এর ভিত্তিতে আইন প্রতিষ্ঠা করা। শুধু আইন প্রণয়নই নয়, তা যেন অনুসরণ করে তা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য তানভীর ইমাম ও কাজী নাবিল আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন