অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে অবশেষে সার্চ কমিটি গঠন করেছে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের দাবী ছিল সার্চ কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুক্তিভিত্তিক পদগুলোতে নিয়োগ দেয়া হোক। কিন্তু সদ্য পদত্যাগকারী গভর্নর ড. আতিউর রহমান কখনোই সার্চ কমিটি গঠন করেননি। তিনি তার ইচ্ছোমতোই ডেপুটি গভর্নর ও কয়েকটি মহাব্যবস্থাপক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন। এতে যেমন যোগ্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে, তেমনি বার বার অযোগ্যদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ৪ বছর চুক্তিভিত্তিক থাকার পর ৩ জন ডেপুটি গভর্নরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আবারো বাড়ানো হয়। যাদের দু’জনকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এদিকে ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত দু’জন পরিচালক ও দু’জন মহাব্যবস্থাপককে সরিয়ে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কর্মকর্তাদের মতে, এসব পদে নিয়োগও সার্চ কমিটির মাধ্যমে করা হোক।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেয়ার পর শূন্যস্থান পূরণে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমানকে প্রধান করে সার্চ কমিটি করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার গঠিত এই কমিটিতে নতুন গভর্নর ফজলে কবির ছাড়াও রয়েছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিআইডিএস) মহাপরিচালক কেএএস মুর্শিদ এবং অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত। সদস্য সচিব করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোকুল চাঁদ দাসকে। গোকুল চাঁদ বলেন, কমিটি দ্রুত ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে প্রয়োজনীয় কাজ করবে। এজন্য দ্রুতই একটি সভাও হবে। তিনি জানান, সার্চ কমিটি ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ দিতে পারে না; আগ্রহীদের বিভিন্ন মান বিচার শেষে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
রিজার্ভ চুরি নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার গভর্নর আতিউর রহমান সরে দাঁড়ানোর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা ও আবুল কাশেমকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। যদিও অনেকের দাবি রিজার্ভ চুরি ঘটনা ধামাচাপা দিতে সকল ডেপুটি গভর্নরই আতিউর রহমানকে ভুল বুঝিয়েছিলেন। আর তাই গভর্নর বিষয়টি তাৎক্ষণিক সরকারের উচ্চমহলে জানাননি। তাই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ায় জড়িত অন্যান্য ডেপুটি গভর্নরদেরও শাস্তির আওতায় আসা উচিত। গভর্নরের পদত্যাগের পর সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফজলে কবিরকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে ডেপুটি গভর্নর পদ দুটি এখনো খালি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের গচ্ছিত ১০ কোটি ডলার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরির খবরটি গোপন রাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিদের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে মুহিত বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিবর্তন আসছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটি পদে পরিবর্তন আসে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন