বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বন্ধ রেখে শ্রমিকদের পারাপার করছে আল মুসলিম গ্রুপ!

দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সাভার সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আল-মুসলিম গ্রুপের সেচ্ছাচারিতায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার উলাইল এলাকায় প্রতিদিন দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। শ্রমিক পারাপারের নামে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী দিয়ে প্রতিদিন কয়েক ধাপে প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যস্ততম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখছে তারা।
এতে রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনাও। কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়রা ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাস নির্মাণের তাগিদ দিলেও এতে কারো কর্নপাত নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভার পৌর এলাকার উলাইল মহল্লায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘেষে অবস্থিত আল-মুসলিম গ্রুপ। সেখানে দুই শিফটে প্রায় ৩০ হাজার পোষাককর্মী কাজ করেন। সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে কর্মীদের কারখানায় প্রবেশ করতে হয়। তারা কারখানার আশপাশে ভাড়া বাসায় থাকেন। প্রবেশের আগে শ্রমিকেরা দল বেঁধে রাস্তার পাশে জড়ো হলে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা লাল পতাকা তুলে “থামুন” মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। ২০-২৫ মিনিট যান চলাচল বন্ধ রাখায় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আবার দুপুর ১টার টায় খাবার বিরতি এবং দুইটায় পুনরায় কাজে যোগদানের সময়কার চিত্র অভিন্ন। এছাড়া বিকেল ৫টা থেকে কয়েক দফায় এবং রাত ৮ টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কয়েক দফায় কারখানা ছুটির সময়ও একই ষ্টাইলে “থামুন” মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে মহাসড়কের একপাশে রাজ ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত এবং অন্যপাশে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। সবমিলিয়ে তারা দিনরাতে প্রায় দেড়ঘন্টা ব্যস্ততম মহাসড়কের উলাইল বাসষ্ট্যান্ডে রাস্তা আটকে শ্রমিক পারাপার করছে। ফলে সৃষ্ট যানজটে জনদুর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দূর-দুরান্ত থেকে আনা শ্রমিকবাহী অর্ধশতাধিক বাস কারখানার সামনের রাস্তার উপরে রাখায় ব্যস্ততম এই মহাসড়কে প্রায়ই দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনাও।
সাভার মডেল থানা পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, রাস্তার পাশে যানবাহন রাখায় এবং ঝুঁকি নিয়ে পারপারের কারণে গত পাঁচ বছরে ওইস্থানে কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে একই মহাসড়কের রেডিও কলোনী বাসষ্ট্যান্ড ঘেষে একই প্রতিষ্ঠানের আরেকটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে কারখানা চালু হলে মহাসড়ক বন্ধের আরেকটি নতুন পয়েন্ট সৃষ্টি হবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
সাভার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আয়নাল হক গেদু বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চত এবং যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন জরুরী হয়ে পড়েছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার শরীফুল ইসলাম বলেছেন, বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ)। উদ্বুত পরিস্থিতি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও সওজের সঙ্গে একাধিকবার আলাপ হয়েছে। আগামিতে রাস্তা চারলেন করা হলে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তবে কবে রাস্তা চারলেন করা হবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি বলেন, পুলিশের পরামর্শে নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে তারা শ্রমিক পারাপার করাচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে আল মুসলিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবদুল্লাহ’র সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে আল-মুসলিম গ্রুপের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (নিরাপত্তা) ফরহাদ খান বলেন, ফুটওভার ব্রিজের জন্য সাভার পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। তবে সদুত্তর মিলেনি। তিনি বলেন, শ্রমিক পারাপারের জন্য পুলিশকে চিঠি দিয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন