শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৫৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন প্রতারিত গ্রাহক

অভিযুক্ত এক্সিম ব্যাংকের বগুড়া শাখা

বিশেষ সংবাদদাতা, বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক বাংলাদেশ (এক্সিম ব্যাংক) এর বগুড়া শাখায় একজন গ্রাহকের গচ্ছিত স্বাক্ষর করা সিকিউরিটি চেক ও ভাউচার ব্যবহার করে ওই গ্রাহকের অজান্তেই বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাত করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রতারিত এক গ্রাহক। বগুড়া শহরের বড়গোলা টিনপট্টির ঢেউটিন ও রড ব্যবসায়ী আজিজুল হক নামের ওই গ্রাহক তার দায়েরকৃত মামলায় ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি ৪০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
প্রতারিত গ্রাহক সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতারিত হবার ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেছেন, ২০০৫ সালে ওই ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার মমতাজ আহম্মেদের প্রস্তাবে বগুড়া শাখায় ব্যাংক হিসাব খোলেন এবং ০৬-০২-০৫ তারিখে বাইমোয়াজ্জাল পদ্ধতিতে ঋণ গ্রহণ ও নবায়ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এই প্রেক্ষিতে দ্রুত ঋণ গ্রহণ ও নবায়নের জন্য ম্যানেজারের কাছে তার স্বাক্ষর করা সিকিউটি চেক ও ভাউচার জমা রাখেন। এ সময় তার নামে শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত মার্চেন্ট (বিও হিসাব নং-৩৩৪ ও ১১৪৭) ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন ম্যানেজার মমতাজ আহম্মেদ। এক্ষেত্রে তার অজান্তেই তার নামে বরাদ্দকৃত ১৮ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে আরো ১৮ কোটি টাকার ঋণ সহ মোট ৩৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়।
২০১০ সালে শেয়ার বাজারের ধ্বসের সময় বিনিয়োগকৃত ওই ৩৬ কোটি টাকার পুঁজির পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে যায়। কিন্তু পুরো বিষয়টি গ্রাহকের কাছে গোপন রাখা হয়। তবে কোনো ভাবে ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রাহক আজিজুল হক এক্সিম ব্যাংকে তার হিসাবের যাবতীয় স্টেটমেন্ট চাইলেও দিনের পর দিন তালবাহানা করে সময় ক্ষেপনের কৌশল নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বাধ্য হয়ে আজিজুল হক বিষয়টি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ভাইসচেয়ারম্যান ও স্থানীয় চেম্বার কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানান। সকলেই বিষয়টি দেখবেন বলে বারবার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে তিনি প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃপক্ষের নিকটে লিখিত আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি কর্তৃপক্ষ পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করে। গঠিত তদন্ত কমিটির দু’টিরই তদন্ত শেষ হয়েছে এবং তদন্ত রিপোর্টও জমা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। তদন্ত রিপোর্টে গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা তা জানা না গেলেও অভিযোগকারী নিয়মানুযায়ী দু’টি কর্তৃপক্ষের কাছেই লিখিতভাবে তদন্তের ফলাফল কি হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন।
অন্যদিকে এক্সিমব্যাংকের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত মার্চেন্ট ব্যাংকে বিনিয়োগকৃত ৩৬ কোটি টাকাসহ তার একটি গোডাউনে রক্ষিত ৩৩ কোটি টাকার মালামাল বেআইনীভাবে মাত্র ২ কোটি টাকায় নিলামের প্রেক্ষিতে মোট ৫৫ কোটি ৪০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭শ’ ৪৪ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে বগুড়ায় ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেছেন। গত ০৫-০৯-১৬ ইং তারিখে এই মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। মামলাটি বর্তমানে চলমান।
বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে বগুড়া শাখার বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার শেখ বাসিরুল ইসলাম বলেন, এই সংক্রান্ত কোন তথ্য জানার থাকলে লিখিতভাবে দিতে হবে। আমাদের হেড অফিস এ বিষয়ে অনুমতি দিলে তবেই এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কিছু বলতে পারবো অন্যথায় নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন