শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুইমিং পুল রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন ৮ কর্মকর্তা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এবার সুইমিং পুল রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণে বিদেশ সফর যাচ্ছেন ৮ সরকারী কর্মকর্তা। আগামী ডিসেম্বর মাসে এ সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। বঙ্গভবনের রেসিডেন্স বøকের সুইমিং পুলটি চালু হওয়ার পর তার রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে তার ইউরোপের তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন।
কর্মকর্তারা হলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের। কর্মকর্তারা এক সপ্তাহের জন্য জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। এ সুমিং পুলটি চলতি মাসের ১২ তারিখ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসেই এই সফর হওয়ার কথা ছিল। ভিসা সংক্রান্ত কাজে কিছু দেরি হওয়ায় সফর ডিসেম্বর মাসে হতে পারে।
তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে বলেন, সুইমিংপুল রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য তাদের এই সফর। আট কর্মকর্তার সফরের সরকারি আদেশ (জিও) গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জারি করেছে ১৪ নভেম্বর। সফরের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যেসব সিস্টেম এখানে রাখা হয়েছে, সেগুলো আমাদের দেশে নতুন। এগুলো কীভাবে অপারেট করবে, তা আমরা জানি না। এজন্য বিভিন্ন দেশের সুইমিং পুল কীভাবে অপারেট করে, সেটা জানতে হবে। না হলে এটা ডিসঅর্ডার হয়ে যাবে।
যারা সফরে যাচ্ছেন, তারা হলেন- গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান সামসুল করিম ভূইয়া, বঙ্গভবনে সংযুক্ত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমান্ডার মিনহাজ আলম, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুরাইয়া বেগম, গণপূর্ত অধিদপ্তর ঢাকার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শওকত উল্লাহ, স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান স্থপতি মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন দিদার এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের আপন বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দিলওয়ারা আলো।
জিও থেকে জানা যায়, ‘কনস্ট্রাকশন অব সুইমিং পুল অ্যান্ড আদার রিলেভেন্ট সার্ভিসেস ইন দ্য প্রিমিসেস অব বঙ্গভবন’ প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের ব্যয় বহন করা হবে। বিদেশ সফরের জন্য গত ১৩ অগাস্ট রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের আপন বিভাগ থেকে গণপূর্ত সচিবকে বঙ্গভবনের দুই কর্মকর্তার নামের তালিকা পাঠানো হয়। ওই চিঠির স্বাক্ষরকারী দিলওয়ারা আলো তার নিজের এবং কমান্ডার মিনহাজ আলমের নাম বঙ্গভবনের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান। চিঠিতে বঙ্গভবন গণপূর্ত উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে বিদেশ সফরের তালিকায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, মিজানুর রহমান শুরু থেকে সুইমিং পুল নির্মাণ প্রকল্পের সার্বক্ষণিক তদারক করছেন। প্রতিনিধি দলে তার নামটিও অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলা হয়। তবে মন্ত্রণালয় তা বিবেচনায় নেয়নি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধানে ১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সুইমিং পুলটি তৈরি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেকনিক কর্পোরেশন; বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্টুডিও ইকোটেকচার লিমিটেড এই প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের সফর অর্থের অপচয়। এসব কর্মকর্তাদের বিদেশ গিয়ে কী হবে? যারা যাচ্ছেন, তারা এটার নকশা করেন নাই, বিশেষায়িত কাজে ভূমিকাও রাখতে পারবেন না।
তিনি বলেন,এসব প্রকল্পের ডিজাইন করে একদল, নির্মাণ করে আরেকদল, আর ঘুরতে যায় আরেক দল। এটা অসামঞ্জস্যকর, অর্থ অপচয়ের প্রক্রিয়া মাত্র।
তিনি আরো বলেন,এসব দেশ পরিদর্শন করার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে আধুনিক মানের সুইমিং পুল রয়েছে। এধরনের কাজে ওই পেশাজীবীদের যুক্ততা থাকলেই যথেষ্ট। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা যেতে পারে।
তিনি বলেন, সুইমিংপুল কোথায় করা হচ্ছে, মাটিতে নাকি ওপরে সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে সুইমিং পুলের নকশা হয়ে থাকে। আমাদের এখানে ধুলো বেশি। সেইসাথে অন্যান্য বায়ুবাহিত আবর্জনা থাকে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এই সুইমিং পুলের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন রাষ্ট্রপতি, গত ১২ নভেম্বর হয় উদ্বোধন।
সুইমিং পুলটিতে জ্যাকুজি, স্টিমবাথের ব্যবস্থা এবং শিশুদের জন্য ওয়েডিংপুলের ব্যবস্থা রয়েছে। মূল সুইমিংপুলটির ব্যাসার্ধ ২৩ দশমিক ৭৫ মিটার। বিভিন্ন পর্যায়ে গভীরতা ছয় থেকে আট ফুট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন